নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য মানুষের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জীবন-জীবিকার স্বার্থে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে করোনা ভাইরাসের এই মহামারি সহসা দূর হবে না। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। যতদিন না কোনো প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হচ্ছে, ততদিন করোনা ভাইরাসকে সঙ্গী করেই হয়তো আমাদের বাঁচতে হবে। জীবন-জীবিকার স্বার্থে চালু করতে হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
‘বিশ্বের প্রায় সব দেশই ইতোমধ্যে লকডাইন শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য মানুষের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে তো নয়ই।’
রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ঋণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশেষ তহবিল বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা কার্যকর করা হয়েছে। যারা কাজে যোগ দিতে পারেননি, তারাও শতকরা ৬০ শতাংশ বেতন পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বেতনভাতা পরিশোধ করা শুরু হয়েছে।
‘দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে মালিকদের আয় যেমন বন্ধ হয়েছে, তেমনি কর্মচারীরাও বিপাকে পড়েছেন। বেশিরভাগ দোকান মালিকের কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা ঈদের আগে স্বাস্থ্যবিধি ও অন্য নিয়ম-কানুন মেনে কিছু কিছু দোকানপাট খুলে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছি। যারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছেন এবং যারা দোকানে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন, আপনারা অবশ্যই নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। ভিড় এড়িয়ে চলবেন।’
নিজ নিজ সুক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। মনে রাখবেন আপনি সুরক্ষিত থাকলে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে, প্রতিবেশী সুরক্ষিত থাকবে, দেশ সুরক্ষিত থাকবে। ঝড়-ঝঞ্ঝা-মহামারি আসবে। সেগুলো মোকাবিলা করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজন জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
‘সংকট যত গভীরই হোক জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা উৎরানো কোনো কঠিন কাজ নয়। এই সত্য আপনারা আবারও প্রমাণ করেছেন। আপনাদের সহযোগিতা এবং সমর্থনে আমরা করোনা ভাইরাস মহামারির আড়াই মাস অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সমর্থ হয়েছি। যতদিন না এই সংকট কাটবে, ততদিন আমি এবং আমার সরকার আপনাদের পাশে থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
Discussion about this post