শিক্ষার আলো ডেস্ক
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চার (৪) জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩তম ব্যাচের এবং আরেকজন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাদের কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অসুস্থদের মধ্যে দুজনকে অভিভাবকরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের কর্মকর্তারা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ অনুরোধ জানান।
উপদেষ্টা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার সময় জানান যে, শিক্ষার্থীরা উষ্ম আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের প্রতি উদ্বেগের কথাও তাদের জানান উপদেষ্টা।
তিনি আরও আশ্বস্ত করেন, শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে সরকার সচেতন রয়েছে। একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল অতি দ্রুত খুলনা যাবে কুয়েট কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চলতি সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও ফেসবুকে এক পোস্টে জানিয়েছেন, কুয়েটের শিক্ষার্থী আন্দোলন ইস্যুতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামীকাল ইউজিসি থেকে একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে কুয়েটে যাবে। তারপর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। সেদিন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করে। তবে ছাত্রদলের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র শিবির হামলা করেছে।
পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস বর্জন করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ছয় দফা দাবি লিখিতভাবে জমা দেন। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্যাম্পাসের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
Discussion about this post