নিউজ ডেস্ক
দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে। ইতোমধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার মাধ্যমে অনেকটাই ‘হার্ডলাইন’ অবস্থানের জানান দিচ্ছেন তিনি। আর এতে বেশ তটস্থ অবস্থায় আছেন ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসির নির্বাচনে জয়ী হন শেখ ফজলে নূর তাপস। গেল ১৬ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা দক্ষিণের নগর পিতার দায়িত্ব নেন তিনি। সেদিনই এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতি ও অনিময়ের বিরুদ্ধে নিজের কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন ডিএসসিসি মেয়র।
দায়িত্ব গ্রহণ পরবর্তী ওই সংবাদ সম্মেলনে তাপস বলেন, ঢাকাবাসীর জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেবো। আর এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কোনো বাধা এলে তা মানা হবে না। ঢাকাবাসীর কল্যাণেই আমি কাজ করবো।
এরপরের দিন অর্থ্যাৎ ১৭ মে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও আঞ্চলিক নির্বাহী প্রধানদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময় করেন নতুন মেয়র। সেই সভায়ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তাপস।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ শৈথিল্য বরদাশত করা হবে না। এ ধরনের কোনো কিছু নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যত বড় কর্মকর্তাই হোক কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য যদি কাউকে বিদায় দিতে হয় তাতেও আমি পিছু পা হবো না।
সেদিন সন্ধ্যায়ই সিটি করপোরেশনের শীর্ষ পর্যায়ের দুই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে বেশ আলোড়ন তৈরি করেন তাপস। ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। কারণ দর্শানো, তদন্ত কমিটি গঠন, সাময়িক অব্যাহতির মতো বিভিন্ন কালক্ষেপনীয় পদক্ষেপ বলয়ের বাইরে গিয়ে ‘ডিরেক্ট ডিসিশন’ এর এমন ঘটনা ডিএসসিসি তো বটেই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের জন্যও বেশ বিরল।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই তিন দিনের মাথায় চাকরিচ্যুত হন আরও এক কর্মকর্তা। এবার চাকরি হারান রাজস্ব বিভাগের ‘বাজার সার্কেল-৩’ এর কর্মকর্তা আতাহার আলী খান। সে সময় ডিএসসিসির নগর পরিকল্পনা বিভাগে সংযুক্ত ছিলেন আতাহার আলী।
নতুন মেয়রের এমন ‘মার মার কাট কাট’ সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে আছেন ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন প্রভাব বিস্তার করে আসা বিতর্কিত কর্মকর্তারা আছেন বেশ দুশ্চিন্তায়। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এমনটাই।
অনেকেই ভাবছেন, দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরই ঈদের ছুটি চলে আসায় সাময়িকভাবে থেমেছে মেয়রের কড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ। আর এখন ছুটির পর আবারও অফিস চালু হওয়ায় যেকোনো দিন যে কারও ‘উইকেট’ পড়ে যেতে পারে বলে ভাবছেন অনেকেই।
Discussion about this post