নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। তবে ডাটা খরচ নিয়ে অধিকাংশের চিন্তাটাই সবচেয়ে বেশি। করোনা সংক্রমণের মধ্যে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চালুর লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি জরিপ চালাতে গিয়ে এই তথ্য পেয়েছে।
জানা গেছে, ওই জরিপে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী এবং সাত হাজারের বেশি শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। জরিপে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৬২ শতাংশই বলেছে তাদের স্মার্টফোন আছে। তবে ডাটা খরচসহ নানা সমস্যার কথা বলেছে তারা। তাছাড়া এই মুহূর্তে অনলাইনে ক্লাস নিয়েও অনেকে নানা সমস্যার কথা বলেছে।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং অনেকে চালুও করেছে। আর প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে সংসদ টিভিতে ক্লাস হচ্ছে। কলেজেও বিচ্ছিন্নভাবে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে অনলাইন ক্লাসে পিছিয়ে রয়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নানান কারণে অনলাইনে ক্লাস নিতে পারছে না এসব বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে সেশনজটের শঙ্কায় রয়েছেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, আরেকটি সভায় দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে কীভাবে ক্লাস নেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইউজিসি গত মাসে অনলাইন শিক্ষার ভূমিকা ও কার্যকারিতার বিষয়ে একটি জরিপ চালায়। এ জরিপের তথ্য বৃহস্পতিবার (৪ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে। এ জরিপের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জরিপের ব্যাপারে ইউজিসির একজন কর্মকর্তা জানান, এত বিপুল শিক্ষার্থীর হাতে স্মার্টফোন থাকতে পারে, এটা তাঁদের ধারণাতেই ছিল না। এখন বাকি যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনে স্মার্টফোন সরবরাহ করার চিন্তাভাবনা আছে। করোনার কারণে এডিবি উচ্চশিক্ষায় অনলাইনে শিক্ষার জন্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্টারনেট খরচ দিতে চায়। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সহায়তা করবে।
ইউজিসির একজন সদস্য জানান, করোনার বন্ধে সব বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাসটা চালু করুক, সেটা ইউজিসি চাইছে। এ বিষয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতামত চাওয়া হবে।
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, তাঁরা মনে করছেন যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও প্রলম্বিত হয়, তাহলে খোলার পর অতিরিক্ত ক্লাস নিয়েও সেশনজট দূর করা যাবে না। এ জন্যই সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশে ৪৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সোয়া আট লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে আছেন আরও বিপুল শিক্ষার্থী। তাছাড়া ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন আরও পৌনে চার লাখ শিক্ষার্থী।
Discussion about this post