নিজস্ব প্রতিবেদক
অবশেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উচ্চতর স্কেল নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার নিরসন হচ্ছে। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাবেন শিক্ষকরা। তবে, উচ্চতর গ্রেড/স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের করা একটি মামলা চলমান থাকায় চাকরির ১৬ বছর পুর্তিতে দ্বিতীয় উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়টি আটকে থাকলো। সম্প্রতি বিষয়টি স্পষ্ট করে একটি চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। স্পষ্টীকরণ চিঠির প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
রোববার (৭ জুন) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়টি আটকে ছিল। এমপিও নীতিমালা ১০ বছর পূর্তি এবং ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেয়ার কথা ছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা কনফিউশন থাকায় গত মার্চ মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টির স্পষ্টীকরণ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। সম্প্রতি বিষয়টি স্পষ্ট করে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে শিক্ষকরা জাতীয় পে স্কেল অনুযায়ী উচ্চতর স্কেল পাবেন। তবে, চাকরি ১৬ বছর পূর্তিতে শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান আছে। তাই এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই।
স্পষ্টীকরণের ব্যাখ্যা হিসাবে অতিরিক্ত সচিব জানান, স্পষ্টীকরণের মানে হলো চাকরি ১০ বছর পূর্তিতে শিক্ষকরা একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। তবে, ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাবেন কিনা বা দ্বিতীয় উচ্চতর গ্রেড শিক্ষকরা কবে পাবেন তা আদালত নির্ধারণ করবেন।
তিনি আরও জানান, স্পষ্টীকরণ এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। অধিদপ্তর চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড আবেদন গ্রহণ করবে। আশা করছি শিগগিরই তারা উচ্চতর গ্রেড পাবেন।
মোমিনুর রশিদ আরও জানান, শিক্ষকরা দীর্ঘদিন থেকেই উচ্চতর গ্রেড বঞ্চিত হচ্ছিলেন। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে ছিল। তাই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছেন। আমরা বহুকষ্টে শিক্ষকদের একটি ভালো সংবাদ দিতে পারলাম।
জানা গেছে, নতুন পেস্কেল আসার পর মানে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে টাইমস্কেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ নিয়মে বঞ্চিত হচ্ছেন কয়েক লাখ এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী। তাদের বিষয়টি মাথায় রেখে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের ‘টাইমস্কেলের’ পরিবর্তে ‘উচ্চতর গ্রেড’ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড দেয়ার ঘোষণা দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর এমপিও কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তের কপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
Discussion about this post