ডা. আবু সাঈদ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারঘোষিত ছুটি শেষে সীমিত পরিসরে আবারও অফিস খুলেছে। এদিকে করোনার সংক্রমণও থেমে নেই। কাজেই এ সময় নিজের সুরক্ষার পাশাপাশি সন্তানের সুরক্ষা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক মা-বাবা। এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানলে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
অফিসে যাওয়ার আগে
• সন্তান যদি বুকের দুধ পান করে, তাহলে মা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে পাম্পের সাহায্যে বা হাত দিয়ে চেপে শিশুর জন্য বুকের দুধ রেখে যাবেন। এই দুধ ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে।
• ধাতব বস্তুতে করোনাভাইরাস অপেক্ষাকৃত বেশি সময় টিকে থাকে। তাই কর্মস্থলে কিংবা বাইরে যাওয়ার সময় হাতঘড়ি, চুড়ি, গয়না ইত্যাদি না পরাই ভালো।
• বাসা থেকেই পানি ও কাগজের প্যাকেটে শুকনো খাবার বা ফল নিয়ে যেতে পারেন। নাক–মুখ ঢেকে ভালোভাবে মাস্ক পরুন, পথে মাস্ক খুলবেন না। ব্যাগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং একটি বোতলে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি রাখুন।
অফিসে করণীয়
• সম্ভব হলে লিফট এড়িয়ে চলুন। নিজের টেবিল-চেয়ারে বসার আগে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। কোনো কিছু স্পর্শ করার আগে ও পরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। অফিসে কারও সঙ্গে কথা বলতে হলে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
বাসায় ফিরে
• বাসার দরজা যদি আপনাকে খুলতে হয়, তাহলে হাতল জীবাণুমুক্ত করুন। জুতা বা স্যান্ডেল বাইরে রাখুন।
• ঘরে ঢুকেই বাচ্চার কাছে যাবেন না। সোজা বাথরুমে চলে যান।
• কানের পেছনের ফিতা ধরে মাস্ক খুলুন। একবার ব্যবহার্য মাস্ক হলে বদ্ধ বিনে ফেলে দিন। আর পুনর্ব্যবহারযোগ্য হলে মাস্কটি কাগজ বা পরিষ্কার প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখে দিন। মাস্কটি ময়লা হয়ে থাকলে গরম পানি ও সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
• সাবান-পানি দিয়ে হাত-মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। সম্ভব হলে গোসল করে নিন। পরনের কাপড় গোসলের সময়ই ডিটারজেন্ট গোলা গরম পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
করোনার এ সময়ে শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জিঙ্ক ও ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার যেমন মাংস, শাকসবজি, লেবুসহ টকজাতীয় যেকোনো ফল বেশি খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ ও পানিও খাওয়াতে হবে পর্যাপ্ত। শিশুদের বয়স অনুযায়ী টিকাগুলো দিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে ফ্লুয়ের টিকা দিলে আরও ভালো।
লেখক: শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
Discussion about this post