বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
করোনাভাইরাসের প্রভাবে থেমে গেছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের আয়ের উৎস টিউশন বা পার্টটাইম জব। টিউশনের টাকা দিয়েই অনেক শিক্ষার্থীর খরচ চলত। এখন অসহায়ের মধ্যে দিন কাটছে তাদের। তবে উপার্জনের মাধ্যম বন্ধ হলেও মওকুফ হচ্ছে না মেস ভাড়া।
এদিকে চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের ভরণপোষণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় মেস ভাড়া পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। করোনা সংকটের সময়ে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি করছে তারা।
কবি নজরুল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল সজিব বলেন, বাবা নেই। সকাল-সন্ধ্যায় টিউশন করে থাকা-খাওয়ার খরচ নিজেরই বহন করতে হয়। কোনো মাসে টিউশনের বেতন পেতে দেরি হলে বা কোনো কোনো মাসে টাকা না পেলে অনাহারেও দিন পার করতে হয়। এখন টিউশন বন্ধ। বাড়িওয়ালা বিকাশে ভাড়ার টাকা পাঠাতে বলেছে। এ অবস্থায় গ্রাম থেকে বাসা ভাড়া দেয়াটা আমার পক্ষে অসম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাড়িওয়ালাদের কিছুটা হলেও মানবিক হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, কলেজের একটা ছাত্রাবাস রয়েছে। সেখানে খুবই অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীর থাকার সুযোগ রয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে মেসে থেকে পড়ালেখা করতে হয়। যাদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের টিউশন এবং কোচিং থেকে আয়ের একমাত্র পথটি বন্ধ। যার কারণে মেসের ভাড়া পরিশোধ করা তাদের জন্য অসম্ভব।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সরকার ও কলেজ প্রশাসনের কাছে জাতীয় সংকটে শিক্ষার্থীদের এই অসুবিধার কথা বিবেচনা করে মেস ভাড়া ৬০% মওকুফের জন্য নির্দেশনা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে চলমান করোনাভাইরাস সংকটে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনাবাসিক ছাত্রদের বাড়ি ও মেস ভাড়া সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে কলেজ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কবি নজরুল সরকারি কলেজ সংসদ। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আয়ের উৎস বর্তমানে বন্ধ। ইতিমধ্যে অনেক বাড়ির মালিক শিক্ষার্থীদের উপর ভাড়া চেয়ে চাপ প্রয়োগ করছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়িওয়ালা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই। যেহেতু সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে, কাজেই বকেয়া ভাড়ার অংকটাও দিন দিন বড় হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের বাড়িভাড়া বিষয়ক জটিলতা নিরসনে কলেজ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা কামনা করছে।
Discussion about this post