বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
করোনা মহামারিতে কখনও ওষুধ সামগ্রী, কখনও স্যানিটাইজার কিংবা অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে রোগীর সেবায় ছুটে যান তৌহিদুল ইসলাম। এ যেন করোনার ভয় উপেক্ষা করে মানুষকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা।
বৈশ্বিক সংকটের এ সময়ে মানবতার সেবায় নিজেকে সঁপে দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২তম ব্যাচ ও ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি ‘লিটল বীস ইংলিশ স্কুলের চীফ অ্যাক্সিকিউটিভের দায়িত্বে আছেন। এর আগে ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন’ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলে শিক্ষকতা করেন তিনি।
তৌহিদুল ইসলামের বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলায় হলেও কাজের প্রয়োজনে তিনি নগরের হালিশহরে থাকেন। সেখানে স্থাপন করা করোনা আইসোলেশন সেন্টারের উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন তৌহিদুল ইসলাম।
চলতি বছরের মার্চে করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ তিন মাস ধরে ব্যস্ততা নেই। তাই এ সময়ে তিনি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন আর্তমানবতার সেবায়। শুরুটা লিটল বীস ইংলিশ স্কুলের দুর্যোগকালিন সহযোগিতার ফান্ড থেকেই। এরপর দেশ-বিদেশে পরিচিত অনেকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তিনি ব্যয় করেছেন মানুষের জন্য।
এ টাকায় রমজান মাসজুড়ে ও ঈদুল ফিতরে গরিব ও অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন অর্থ, বস্ত্র। এছাড়া আইসোলেশন সেন্টারে ওষুধ কেনার জন্য সংগ্রহ করেন লক্ষাধিক টাকা। সবমিলিয়ে গত তিনমাসে মানুষের সেবায় ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭ লাখ টাকা।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর পরেই চট্টগ্রাম করোনা সংক্রমণের হটস্পট। তবে চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত আইসোলেশন সেন্টার নেই। প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং রোগীদের চাহিদা বাড়ছে। তাই আমরা তাৎক্ষণিক প্রাথমিক সেবা দেওয়ার জন্য এ ‘করোনা আইসোলেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করি। সেখানে রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগীদের সুবিধার্থে আইসোলেশন সেন্টারে টিভি ও ইন্টারনেট সুবিধা রেখেছি আমরা।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এ ক্রান্তিকালে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই দেশ ও মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব। এ সময় চিকিৎসার জন্য সবাইকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের এ কাজে ছাত্রলীগের অনেকেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। দেশ-বিদেশের যে কেউ সেবা পেতে কিংবা আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
Discussion about this post