অনলাইন ডেস্ক
লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর চীনের উৎপাদিত পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। সর্বভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) বলিউড ও ক্রিকেট তারকাদের প্রতি এক খোলা চিঠিতে চীনা পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এখবর জানিয়েছে।
যেসব বলিউড ও ক্রিকেট তারকাকে চীনা পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে সিএআইটি তাদের মধ্যে রয়েছেন, অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, মহেন্দ্র সিং ধোনী, সচিন টেন্ডুলকার। ব্যবসায়ীরা এই প্রচারণার নাম দিয়েছেন, ‘হামারা সামান- হামারা আভিমান’।
৭ কোটি ব্যবসায়ী ও ৪০ হাজার বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে দাবি করা সিএআইটি বর্জন করার মতো পণ্যের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে। প্রচারণার অংশ হিসেবে তারা শুধু যে চীনা পণ্য বিক্রিতে অনুৎসাহিত করছে তা নয়, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্য বর্জন করতে ভোক্তাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে, ভারত সরকারও চীনা পণ্যের বিরুদ্ধে মনোভাব বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। বুধবার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, টেলিকম বিভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ভারত সঞ্চার সিগাম লিমিটেডকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে ফোর-জিতে উন্নীত করতে চীনা পণ্য ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হবে। চীনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উৎপাদিত সরঞ্জামের প্রতি নির্ভরশীলতা কমানোর জন্যও সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে বলা হবে।
ভারতে চীনবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট নির্মাতা ওপ্পো তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফাইভ-জি স্মার্টফোন উন্মোচনের সরাসরি সম্প্রচার বাতিল করেছে।
তবে দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভারতের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার সদর বাজারে ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলছেন, চীনা পণ্য বর্জন হলে সেগুলোর স্থলাভিষিক্ত কী দিয়ে হবে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে গুরুত্ব দিলেও উচ্চ শুল্ক, লাল ফিতার দৌরাত্ম্যর কারণে দেশীয় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে উত্তেজনার পর গত সোমবার উভয় পক্ষ সংঘাতে জড়ায়। ওইদিন লাদাখের সুউচ্চ পর্বতমালায় গালওয়ান নদীর পূর্ব পার ধরে টহলে বেরিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিহার রেজিমেন্টের একটি প্যাট্রোল পার্টি। তাদের সঙ্গেই চীনা সেনাদের তীব্র সংঘাত হয়। ভারতের অভিযোগ, লাইন অফ কন্ট্রোল উপেক্ষা করে তাদের সীমান্তে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনারা। বেইজিং-এর পাল্টা অভিযোগও একই রকম। ওই ঘটনায় ভারতের অন্তত ২৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি।
Discussion about this post