অনলাইন ডেস্ক
প্রত্যেক মানুষের মনেই এখন একটা সংশয় “আমি করোনা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি কিনা?’’। সঠিক সময়ে পরীক্ষা এবং সচেতনতা শুরুর অভাবে পরিবার ও সমাজকে সংক্রমিত করছে আক্রান্তরা। তবে করোনা চিকিৎসার কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ওয়েব এপ্লিকেশন ডা. আপা ভিন্ন ভাবে এই সংক্রমণ এড়ানো সহ বর্তমান সংকটে নানামুখী সহায়তা করবে বলে জানান এর উদ্ভাবক নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আহমেদ কাওছার। গতকাল শনিবার অ্যাপটি সবার জন্য একটি ওয়েব লিঙ্কে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে কোনো ডাক্তার নেই। আবার থাকলেও ভয়ে রোগীর সাথে যোগাযোগ করছেন না। এমনকি এরই মধ্যে জ্বর কাশিতে ভুগছিল এমন কয়েকজন করোনা সন্দেহ রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন; তাদেরকে কেউ সাহায্য পর্যন্ত করতে আসেনি। আবার হোম কোরাইন্টেনে বা আইসোলেশনে অনেকে হতাশ হয়ে যাচ্ছেন। উদ্ভুত এসব সমস্যার সমাধানে এই অ্যাপ বানানোর পরিকল্পনা করেন বলে জানান কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তায় দক্ষ তরুণ এই উদ্ভাবক।
তিনি বলেন, সংকট থেকে উত্তরণের চিন্তা থেকে গত ২ মাস ধরে ৩ হাজার করোনা আক্রান্ত রোগীর ডেটা বিশ্লেষণ করে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রামটি বানাতে সক্ষম হয়েছি। এটি চিকিৎসার পাশাপাশি সম্পূর্ণভাবে আপনার একজন বন্ধু বা সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
একজন ডাক্তারের মত সূক্ষ থেকে সূক্ষ লক্ষণ দেখে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা এবং পরীক্ষা করার প্রয়োজন থাকলে বলে দিবে এই অ্যাপ। কাওসার দাবি, এটি ৯৬% সঠিকভাবে করোনার রিস্ক এনালাইসিস করতে পারবে। এবং যেহেতু এটি একটি অনলাইন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম, সেহেতু সর্বদা নতুন রোগীদের ডেটা থেকে শিখে আরও নির্ভুল হতে থাকবে এই অ্যাপ।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এই অ্যাপটি বাংলায় সরাসরি কথা বলবে এবং করোনার বিষয়ে যে কোনও প্রশ্ন এবং তথ্য (নম্বর, পুলিশ লাইন, আপডেট তথ্য ইত্যাদি) দেবে, চিকিৎসকের মত প্রশ্ন করে কোভিড-এর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে, রোগীর বর্তমান অবস্থা শুনে দৈনিক আপডেট রুটিন দেওয়াসহ বন্ধু হিসেবে কবিতা, গান, জোক্স শুনাবে এবং ব্যবহারকারীর সেন্টিমেন্ট বুঝে সে অনুযায়ী সান্ত্বনা দেবে।
প্রসঙ্গত, সম্পূর্ণ কাজটিতে আহমেদ কাওছারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন, চট্টগ্রাম প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অভিষেক দাস এবং নোবিপ্রবির বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী এস কে ফয়সাল আহমেদ। এর নামকরণের ব্যাপারে কাওছার বলেন, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে একটি জাতীয় দৈনিক নিউজের শিরোনাম ছিল ‘ডাক্তার আপা’। যেখানে দেখা যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একজন নারী জেসমিন আক্তার কীভাবে ডাক্তারি প্রশিক্ষণ দিয়ে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকেই মূলত এই নামের প্রবর্তন।
কাওছার আরও বলেন, যথেষ্ট পরিমান আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় এবং বাংলা ভাষার ডাটার রিসোর্স না পাওয়ায়, আমাদের প্রোগ্রামটি ভালোভাবে ট্রেইন করতে পারিনি, ফলে এটি সব কথা বুঝার মত ক্ষমতা হয়ে উঠেনি, যাকে আমরা বলি ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ আন্ডারস্টেন্ডিং। তবে আমি বিশ্বাস করি, সবাই যখন সেটি ব্যবহার করবে, সেটি তার নিজের ভুল থেকে শিখতে পারবে। এভাবে ডাক্তার আপা নিজেকে দক্ষ করে নিবে। আমরা বিশ্বাস করি যে এই প্রোগ্রামটি বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন ডাক্তারের হেল্পিং হ্যান্ড হিসাবে কাজ করবে।
অ্যাপস লিঙ্ক covid.moonpi.tech
Discussion about this post