বিনোদনডেস্ক
প্রতিটি দিনই সন্তানের কাছে বাবা-মায়ের ভালোবাসা বিশেষ, জীবনের সেরা প্রাপ্তির। বাবা দিবস আসে আনুষ্ঠানিকতায় বাবাকে মনে করার জন্য প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালন করা হয়। আজ বিশ্ব বাবা দিবস। আজকের দিনে যাদের বাবা আছেন, তারা বাবার জন্য দিনটিকে বিশেষ করে তোলার সবটুকু চেষ্টাই করবেন।
যাদের বাবা নেই, তারা বাবার জন্য প্রার্থনা করবেন। বাবাকে মিস করবেন ভালোবাসার আবেগে। শিক্ষার আলো পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথিবীর সকল বাবাকে বিনম্র শ্রদ্ধা। দেশে বিদেশে বিভিন্ন সময় বাবাকে নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় গান। সেইসব গান বাবার জন্য মনের মধ্যে ভালোবাসা জাগায়, আলোড়ন তুলে। বাবার জন্য গাওয়া জনপ্রিয় কিছু বাংলা গান তুলে ধরা হলো।
আয় খুকু আয়
এটিকে সবাই ভারতীয় বাংলা গান হিসেবেই সমাদর করে। তবে এদেশে গানটির জনপ্রিয়তার শুরু ১৯৭৯ সালে কাজী হায়াতের ‘দ্য ফাদার’ চলচ্চিত্রে ব্যবহারের পর থেকেই। ‘আয় খুকু আয়’ গানটি এখনও শ্রোতাদের মনকে অস্থির করে তোলে। পুলক বন্দোপাধ্যায়ের কথা এবং ভি বালোসারার সুরে গানটি গেয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী মজুমদার। নতুন করে গানটির আয়োজনে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় দুই কণ্ঠ তারকা আসিফ আকবর ও ন্যানসি। সেটিও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
আমার বাবার মুখে
এন্ডু কিশোরের গাওয়া ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’ এখনও হৃদয়ে অনুরণন সৃষ্টি করে বাবার আদেশ-নির্দেশের প্রতি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে গানটি প্রকাশ পায় ১৯৮৪ সালে। বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ ছবিতে গানটি ব্যবহার করা হয়েছিলো।
বাবা বলে গেল
‘বাবা বলে গেল আর কোনোদিন গান করো না’ গানটির কথা সবাই জানলেও শিল্পী শামীমা ইয়াসমিন দিবার কথা অনেকেই জানেন না। আমজাদ হোসেনের কথা ও আলাউদ্দিন আলীর সুরে ১৯৮১ সালে গানটির রেকর্ডিং হয়। আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ চলচ্চিত্রে এ গানটি ব্যবহৃত হয়। এই গানটিও বাবা দিবসে বেশ সমাদৃত।
বাবা বলে ছেলে নাম করবে
এক কথায় বলে দেয়া যায় বাংলাদেশে বাবা নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শ্রুতিমধুর গান ‘বাবা বলে ছেলে নাম করবে’। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র ঠোঁটে এবং শিল্পী আগুনের গাওয়া গানটি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির। গানটি প্রকাশের পর থেকেই দর্শকপ্রিয়তা পায়। গানটির কথা লিখেছেন মনিরুজ্জামান মনির ও সুরারোপ করেছেন আনন্দ মিলিন্দ ও আলম খান।
বাবা – জেমস
নব্বই দশকে এদেশে ব্যান্ড সংগীতের সোনালী দিন ছিলো। সেসময় তুমুল জনপ্রিয় ছিলো জেমসের নগর বাউল ব্যান্ড। জেমসের কণ্ঠে ‘মা’ গানটি বলা চলে রীতিমত রেকর্ড তৈরি করেছিলো। সেই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে ‘হারজিৎ’ অ্যালবামে জেমস গেয়েছিলেন ‘বাবা’ শিরোনামের গান। রাতারাতি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিলো সেটি। বাবা হারানোর শোকে মুহ্যমান এক ছেলের আকুতি নিয়েই ছিলো গানটি।
বাবা তোমার কথা মনে পড়ে
সংগীত জগতে এবি বলে খ্যাত এলআরবি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুর ‘বাবা তোমার কথা মনে পড়ে’ গানটি নব্বই দশকে প্রকাশ পায়। বাবাকে নিয়ে গাওয়া এ গানটি স্থান পায় তার ‘প্রেম তুমি কি?’ শিরোনামের একক অ্যালবামে। গানটির কথা ও সুর করার পাশাপাশি গেয়েছিলেন এবি।
বাবা নেই
আসিফ আকবরের গাওয়া বাবাকে নিয়ে এই গানটিও বেশ জনপ্রিয়। বাবা নেই বাবা নেই, মানতে পারিনা কিছুতেই এমন কথার গানটি লিখেছেন প্রদীপ সাহা। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন রাজেশ ঘোষ। পপী শিরোনামের একটা মিশ্র অ্যালবামে গানটি গেয়েছিলেন আসিফ।
এছাড়াও বাবাকে নিয়ে গাওয়া মনির খানের ‘বাবা তোমার ছেলে আজ’, ফাহমিদা নবীর ‘আছো তুমি কোন সুদূরে’, বন্নি আহমাদের ‘বাবা বলতো বড় হয়ে নে খোকা’, ঝিনুকের ‘বাবা খেয়াল রেখো তুমি তোমার মতো’, ফাবিহার ‘আমি যাচ্ছি বাবা’, তারিনের ‘আমার দেখা প্রথম নায়ক আমার কাছে সেরা, বাবা তোমার হৃদয়টা যে আদর স্নেহে ঘেরা’, ডিফারেন্ট টাচ ব্যান্ডের মিসবাহর কন্ঠে ‘বাবা বলত ‘ গানগুলোও যে কোনো সন্তানের মনে বাবার জন্য অপার্থিব প্রেমের আবেদন সৃষ্টি করবে।
এদিকে সম্প্রতি বাবা দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী ও আসিফ আকবর। গানটির শিরোনাম ‘বাবা ছেলের টান’। এই গানে বাবা ও ছেলে হয়ে হাজির হয়েছেন তারা।
এখানে গানে গানে তারা বলেছেন বাবা ও ছেলের মধ্যকার সম্পর্ক, প্রেম-ভালোবাসা, আবেগ আর দায়িত্ববোধের কথা। যেখানে বাবার কথাগুলো গেয়েছেন সৈয়দ আবদুল হাদী, আর ছেলের কথাগুলো আসিফ আকবরের কণ্ঠে। বাবা দিবস উপলক্ষে গত ১৯ জুন গানটি প্রকাশ করছে ‘ধ্রুব মিউজিক স্টেশন’ (ডিএমএস) ।সুহৃদ সুফিয়ানের কথায় গানটির সুর করেছেন কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক কিশোর দাশ। সংগীতায়োজন করেছেন সুমন কল্যান ও কিশোর দাস।
বাংলা ভাষার বাইরে এলভিস প্রেসলির কণ্ঠে ‘ডোন্ট ক্রাই ডেডি’, গ্রিন ডে’র ‘ওয়েক মি আপ’, ম্যাডোনার ‘পাপা, ডোন্ট প্রিচ’ ও ‘ওহ ফাদার’, দ্য গেইমের ‘লাইক ফাদার লাইক সন’, এরিক ক্লেপটনের ‘মাই ফাদার’স আইস’, ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ‘মাই ফাদারস হাউস’, দ্য টেম্পটেশনের ‘পাপা ওয়াজ আ রোলিং স্টোন’, কুইনের ‘ফাদার টু সন’, হ্যারি চ্যাপলিনের ‘ক্যাটস ইন দ্য ক্রেডল’, জে জেডের ‘গ্লোরি’, জন মেয়ার্সের ‘ডটার্স’, বিলি সাইরাস ও মাইলি সাইরাসের ‘আই লার্নড ফ্রম ইউ’, লুথার ভেনড্রসের ‘ড্যান্স উইথ মাই ফাদার’, বিয়ন্সের ‘ড্যাডি’ গানগুলো খুব জনপ্রিয়।
এছাড়াও কেইথ আরবানের ‘সং ফর ড্যাড’, রেবা ম্যাকএন্টায়ারের ‘দ্য গ্রেটেস্ট ম্যান আই এভার নো’, স্টিভ ওয়ান্ডারের ‘ইজন’ট শি লাভলি’, জেমস ব্রাউনের ‘পাপা, ডোন্ট টেক নো মেস’, উইল স্মিথের ‘জাস্ট দ্য টু অব আস’, অ্যাস্টার রথের ‘হিজ ড্রিম’, টু প্যাকের ‘পাপা’জ সং’, কমন ফিচারিং লরিন হিলের ‘রিট্রোটসপেক্ট ফর লাইফ’, নাসের ‘ডটার্স’, কেইনি ওয়েস্ট ও জে জেডের ‘নিউ ডে’, বার্ডম্যান ও লিল ওয়েনের ‘স্টানিং লাইক মাই ড্যাডি’, কেনি চেসনির ‘দেয়ার গোস মাই লাইফ’ প্রভৃতি গানগুলোও বাবার জন্য গান হিসেবে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।
Discussion about this post