নিউজ ডেস্ক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মানবিক চিকিৎসক ডা. সমিরুল ইসলাম আর নেই।
গতকাল(২৪জুন) বুধবার দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনিই চট্টগ্রামে প্রথম প্লাজমা থেরাপি নিয়েছিলেন। সমিরুল ইসলামের স্ত্রী চমেকের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনা ইসলাম এবং দুই সন্তানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তারা বাসায় চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। মানবিক এ চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো চট্টগ্রামে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রকাশ করেন শোক।
জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২১ মে তাকে চমেক হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গত ২৬ মে তাকে রক্তের প্লাজমা দেওয়া হয়। গত ৩১ মে দ্বিতীয় দফা করোনা টেস্ট করানো হলে ফলাফল নেগেটিভ আসে। তখন ডা. সমিরুলের চিকিৎসাসেবা দেওয়া চমেক হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ করোনার কারণে তার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বলেছিলেন। গত ১৩ জুন থেকে তিনি মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল দুপুরে হঠাৎ ভেন্টিলেশন প্রয়োজন হলে তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দেয়া হয়।
সমিরুলের বন্ধু স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সামিরুল দুই সপ্তাহ চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন। তাকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হলে চমেক থেকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে তার করোনা নেগেটিভ প্রতিবেদন আসে। তবে করোনার কারণে তার ফুসফুসে যে ক্ষতি হয়েছে তা সারানো যায়নি। ফুসফুসের জটিলতা দেখা দেয় এবং অক্সিজেন স্যাচুরেশান কমে যায়। এরপর লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান।’
জানা যায়, ডা. সমিরুল ইসলাম ছিলেন একজন আন্তরিক ও মানবিক চিকিৎসক। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পরও তিনি চিকিৎসা বন্ধ করেননি। নিয়মিত হাসপাতালে গেছেন, রোগীদের সেবা দিয়েছেন এবং অস্ত্রোপচারও করেছিলেন। করোনাকালের সম্মুখপানের এ যোদ্ধা টানা ৩৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে করোনার কাছে হার মানলেন। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এই করোনাযোদ্ধার জন্য চট্টগ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।
Discussion about this post