বিনোদনডেস্ক
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হয় আমেরিকাকে। সেখানে নভেল করোনাভাইরাস তাণ্ডব চালিয়েছে। আজ ২ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৩ জন। আর সেখানে করোনায় প্রাণ গেছে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৮ জনের। ধারণা করা হচ্ছে খুব দ্রুতই প্রতিদিন দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখের উপর ছাড়াবে।
আমেরিকার নিউ জার্সিতে দীর্ঘদিন ধরেই বাস করছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা। সেখানে তার সঙ্গে আছেন স্বামী সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিক। আরও আছেন দুই মেয়ে সুমি ও ঊর্মি এবং একমাত্র ছেলে নাহিন। সবাইকে নিয়ে সেখানে তিনি নিয়মিত বসবাস করছেন প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময়। বিশেষ প্রয়োজনে দেশে আসেন, আবার চলে যান। করোনার এই দুঃসময়টা নিউ জার্সিতেই রয়েছেন শাবানা। সেখানে কেমন আছেন প্রিয় অভিনেত্রী তার সংসার নিয়ে? জানতে চান তার ভক্ত ও অনুরাগীরা।
সেই কৌতুহলের জবাব জানতে চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।শাবানার খুব ঘনিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভালো আছেন শাবানা। তার পরিবারের সদস্যরাও করোনা থেকে মুক্ত রয়েছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সচেতন ছিলেন তারা। তাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছে শাবানার পরিবার। ঘরবন্দী সময়টা সবাই ইবাদাত করেই কাটাচ্ছেন।
নিউ ইয়র্কের তুলনায় শাবানার আবাসস্থল নিউ জার্সিতে করোনার প্রকোপ কম। তবে এখানেও ভয়ংকর আঘাত হেনেছে এই মরণঘাতি ভাইরাস। রাজ্যটিতে ২ জুলাই পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর মোট আক্রান্ত প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার। এই পরিস্থিতিতেও শাবানাসহ অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিরাপদ রয়েছেন।
এদিকে আরও জানা গেছে, দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন শাবানা। নিজের স্বামীর বাড়ি যশোরের কেশবপুরে প্রায় ৫০০ পরিবারের জন্য নানা রকম সহায়তাও পাঠিয়েছেন শাবানা। শুধু তাই নয়, তিনি প্রার্থনা করছেন তার মাতৃভূমি ও এখানকার মানুষেরা যেন রক্ষা পান এই মহামরি থেকে। সেইসঙ্গে নিজের জন্য এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৫২ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাবানা। ঢাকার গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও মাত্র ৯ বছর বয়সে তার শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। শিশুশিল্পী হিসেবে শুরু করেন অভিনয় ‘নতুন সুর’ ছবির মাধ্যমে।
১৯৬৮ সালের ঈদের দিনে মুক্তি পায় নায়িকা হিসেবে শাবানার প্রথম ছবি ‘চকোরী’। সেই ছবিটির পরিচালকও ছিলেন তার চাচা এহতেশাম। শাবানার বিপরীতে এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন চিত্রনায়ক নাদিম। প্রথম ছবিই তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছিল দর্শক মহলে। তারপর কেবলই ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি।
অভিনয় জীবনে উপহার দিয়েছেন ২৯৯টি চলচ্চিত্র। যার মধ্যে ১৩০টি চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে ছিলেন আলমগীর। তার সর্বশেষ ছবি আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’। ১৯৯৭ সালে এটি মুক্তি পায়। এরপর থেকেই আড়ালে চলে যান এই অভিনেত্রী। আর ২০০০ সাল থেকে স্থায়ী নাগরিক হিসেবে বাস করতে শুরু করেন আমেরিকায়।
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে শাবানা দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন আজীবন সম্মাননাও।
অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার ও কথক একাডেমি পুরস্কার।
Discussion about this post