বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) নয় মাস ধরে স্থায়ী উপাচার্য নেই। এছাড়া উপ-উপাচার্য, ট্রেজারারসহ বেশ কিছু পদ শুরু থেকেই শূন্য পড়ে আছে।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরে প্রায় ৯ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দীর্ঘদিন পার হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই পদে স্থায়ী কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার পদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এদিকে শূন্য রয়েছে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা, একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনের পদ। সেইসাথে রেজিস্ট্রারসহ চারটি অনুষদের ডিন পদে নিয়োগকৃতদের সকলেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত। শূন্যতার তালিকায় আরো দেখা যায়- তিনটি ইনস্টিটিউটের মধ্যে দুটি ইনস্টিটিউটেরই গভর্নিং বডি নেই, ইতিহাস বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক অনুমোদন নেই, ৩৪ টি বিভাগের মধ্যে ২৯টি বিভাগে অধ্যাপক নেই, তিনটি বিভাগ এবং একটি ইনস্টিটিউটের কোনো নিজস্ব শিক্ষক নেই, নেই প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার এবং আবাসনের সুবিধা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচটি হলে আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র দুই হাজার শিক্ষার্থী। তবে সেসকল হলেও নেই রিডিং রুম, লাইব্রেরি এবং খাবারের মতো প্রয়োজনীয় বিষয়ের তেমন সুযোগ-সুবিধা। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন, প্রধান ফটক, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, স্থায়ী শহিদ মিনার, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এই অবস্থার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দায়ী করছেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপরিকল্পিত এবং স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তকে। সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করে একের পর এক নতুন বিভাগ খোলা এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এসব সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার পরে হয়তো এসকল বিষয়ের সমাধান হবে। এসময় তিনি উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার পদের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও বলেন।
প্রসঙ্গত, বশেমুরবিপ্রবি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সাতটি অনুষদ এবং তিনটি ইনিস্টিউটের অধীনে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়ন করছেন।
Discussion about this post