বিনোদনডেস্ক
বলা হয়ে থাকে কলকাতার মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে হেমন্তের গলা দারুণ মানাত। আর এন্ড্রু কিশোর ছিলেন এমন এক গায়ক যার কণ্ঠ মানিয়ে গেছে এদেশের সিনিয়র-জুনিয়র অনেক নায়কের সঙ্গে। সেই আনোয়ার হোসেন, নায়করাজ রাজ্জাক থেকে শাকিব খান পর্যন্ত; প্রায় সব নায়কের জন্যই গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। প্রায় সবার সঙ্গেই আছে জনপ্রিয় গান।
তারমধ্যে সালমান শাহ’র নামটি রাখতে হয় অগ্রভাগে। অকালে চলে যাওয়া এই নায়কের সুপারহিট অনেক গানের গায়ক ছিলেন তার বন্ধু আগুন। তবে এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া হিট গানের সংখ্যাও কম নয়। যেখানে উল্লেখ করা যায়, তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, আমি তোমার প্রেমে পাগল, গান আমি গেয়ে যাবো, ও সাথীরে তুমি ছাড়া ভালো লাগে না, সব সখীরে পার করিতে নেবো আনা আনা, আমার নাকেরই ফুল বলে রে, এখানে দুজনে নির্জনে, এ জীবনে যারে চেয়েছি গানগুলো অন্যতম। এসব গানের প্রায় বেশিরভাগ গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। বলা চলে বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর ও সালমান শাহ’র জুটি সিনেমার পর্দায় দারুণ সফল ছিলো।
কাজের সুবাদেই তাদের দেখা হতো। আড্ডাও দিতেন। তার প্রমাণ থেকে গেছে ছবিতে। গেল ৬ জুলাই এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুর পর তেমনি একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেখানে দেখা গেছে ঢাকাই সিনেমার তিন তারকা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর ও সালমান শাহকে। অনেকেই ছবিটি পোস্ট করে মন খারাপের ক্যাপশন দিচ্ছেন। তারা তিনজনের কেউ আজ পৃথিবীতে নেই। কিন্তু ছবিটি রয়ে গেছে তাদের স্মৃতি হয়ে। এ ছবির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এটি ১৯৯৫ সালের দিকে তোলা। কোনো গানের স্টুডিওতে।
বুলবুল, এন্ড্রু ও সালমান; এই ত্রয়ীর তুমুল হিট একটি গান ‘ভালো আছি ভালো থেকো’। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া মতিন রহমানের ‘তোমাকে চাই’ ছবিতে ব্যবহার হয়েছিলো কালজয়ী এই গানটি। দেশের নন্দিত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা ও সুরের এই গানটিকে নতুন করে ‘তোমাকে চাই’ ছবির জন্য সংগীতায়োজন করেছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। আর পরিচালকের বিশেষ অনুরোধে গানটি গেয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর ও সাবিনা ইয়াসমিন। পর্দায় এন্ড্রু কিশোরের গানটিকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সালমান শাহ। গানটি এ ছবি মুক্তির আগেই জনপ্রিয় ছিলো। তবে এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠ ও সালমান শাহের উপস্থিতির জন্য এ ছবির হাত ধরেই গানটি সুপারহিট ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সব প্রান্তের মানুষের কাছে।
এ গান তৈরির গল্প জানাতে গিয়ে চলচ্চিত্রকার মতিন রহমান গণমাধ্যমে স্মৃতিচারণ করেন, ‘প্রথমে ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ গানটি গাইতে প্রথমে রাজি ছিলেন না এন্ড্রু কিশোর। কারণ এটি আগে নাটকে ব্যবহার করা হয়েছিলো। কিশোর বললো- অন্যের গাওয়া গান গাইবো না। আমাদের অনুরোধে সে রাজি হয়েছিলো। অসাধারণ গেয়েছিল গানটি। শ্রোতাও গ্রহণ করেছে। এতে কিশোরও খুব অবাক হয়েছিলো।’
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর ও সালমান শাহ। ঢাকাই সিনেমাকে সমৃদ্ধ করা তিন মহাপুরুষ। একটা সময় তারা ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়াতেন। আজ তিনজন কেবলই ছবি। যেখানেই থাকুন ভালো থাকবেন, এই প্রত্যাশা আমাদের চিরকাল।
Discussion about this post