নিউজ ডেস্ক
পুলিশের চাকরি করতে চাইলে অবৈধ উপায়ে আয় উপার্জন করা যাবে না। তাহলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করতে হবে। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সারা দেশের ৬৬০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কথা বলেন।
আইজিপি বেনজীর আহমেদ তার কার্যালয়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী সারা দেশের থানার ওসিদের সঙ্গে টেলিকনফারেন্স করেন। আইজিপি ওসিদের উদ্দেশে বলেন,‘পুলিশের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের কাছে ঘুষ বা মাসোহারা চাইলে সরাসরি আমাকে জানাবেন।’
আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, অবৈধ অর্থ উপার্জন করে বিলাসী জীবন যাপন করা পুলিশের চাকরি নয়। দুর্নীতিবাজরা পুলিশে থাকতে পারবে না। বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা জাগলে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করতে হবে।
ওসিদের তিনি বলেন, নিজেরা অবৈধ উপার্জন করবেন না, অন্য কাউকে অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগও করে দেবেন না।
পুলিশ প্রধান বলেন,গত তিন মাসে করোনাকালীন পুলিশ জনগণের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য যা করেছে, তা অভূতপূর্ব। এতে পুলিশের প্রতি আস্থা, অগাধ বিশ্বাস ও সম্মান বেড়েছে মানুষের। মানুষ পুলিশকে যে সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে, তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।
তিনি আরও বলেন, গত তিন মাসে পুলিশ যে অবস্থানে গেছে,সেখান থেকে ফেরা যাবে না। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে পুলিশ জনগণের হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক ব্যবসায় জড়িত হবেন না, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না। তিনি পুলিশকে মাদকমুক্ত করতে চান বলে জানান।
বেনজীর আহেমদ বলেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজারবাগে পুলিশ সদস্যরাই প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। পুলিশ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সেবা নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ মানুষের দোরগোড়ায় যেতে চায়। সাধারণ মানুষকে নিপীড়ন ও নির্যাতন থেকে পুলিশকে বেরিয়ে আসতে হবে। শারীরিক শক্তি ব্যবহার না করে আইনি সক্ষমতা ও মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে। সৎ ও স্বচ্ছ উপায়ে যেন পুলিশের প্রত্যেক সদস্য জীবন যাপন করতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে সদস্যদের জন্য জনকল্যাণ পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।
পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ বলেন, ৬৬০ থানার ওসি হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি। তাঁদের ওপর পুলিশের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। বক্তব্যের শুরুতে আইজিপি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৪৭ শহীদ পুলিশ সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য হারিয়ে বিপন্ন এসব পরিবারের সুখে–দুঃখে সঙ্গী হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন আইজিপি।
Discussion about this post