প্রস্তুতি নিতে হবে পরিকল্পনা করে
অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসাতে আবেদন করার আগে আবেদনকারীকে কয়েকটি দিক থেকে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়াতে আসতে হলে উদ্দেশ্য অবশ্যই শিক্ষাই হতে হবে। এর ব্যতিক্রম ভাবনা নিয়ে এ ভিসায় আবেদন না করাই শ্রেয়। আর সে ক্ষেত্রে সত্যিকার মেধাবী হওয়াটাই প্রাধান্য পায় সবার আগে। এর পরপরই অর্থনৈতিক ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে। এখানে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও নিজের খরচ বহনের আর্থিক সচ্ছলতা আবেদনকারীর পরিবারের রয়েছে কিনা তা ভালো করে বিবেচনা করতে হবে। যদিও পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ উপার্জনের বেশ কতক সুযোগ রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়, তবে সে উপার্জনে অনেক সময় খরচ চালাতে হিমশিম খান অনেকে। তাই এ বিষয়টাকে অনেকটা বোনাস হিসেবে ধরে রাখাই ভালো।
ইংরেজির দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে হবে
ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের মাপকাঠি না হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে গেলে ইংরেজি ভাষার দক্ষতাই প্রধান সোপান হয়ে দাঁড়ায় বিদেশে পড়াশোনা করতে। বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর চেয়েও অস্ট্রেলিয়ায় এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। ইংরেজির দক্ষতা প্রমাণ ছাড়া শিক্ষার্থী হিসেবে এ দেশে ভিসা পাওয়া অসম্ভব। তাই ইংরেজি ভাষা জ্ঞানে বেশ পাকাপোক্ত হওয়াটা খুবই জরুরি। বর্তমানে ইংরেজি ভাষা জ্ঞান প্রমাণ করার অনেক পরীক্ষা থাকলেও ‘আইইএলটিএস’ বেশি পরিচিত। অস্ট্রেলিয়াতে আবেদনকারী স্নাতক বা তার নিচে পড়তে চাইলে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা প্রমাণের পরীক্ষায় অর্থাৎ আইইএলটিএস-এ ন্য‚নতম সাড়ে ৫ পেতে হবে। কোর্স ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেদে তা বেশি স্কোরেরও প্রয়োজন হতে পারে। আর আবেদনকারী স্নাতকোত্তর পড়তে চাইলে আইইএলটিএস-এ ন্য‚নতম ৬ স্কোর থাকতে হবে। তবে আবেদনকারী ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণের প্রয়োজন পড়ে না। তবে আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির শর্তে বেশি স্কোর করারও প্রয়োজন পড়ে যা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটই দেওয়া থাকে।
বিষয় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপ‚র্ণ
বিদেশে পড়তে ইচ্ছুক এমন অনেকেই কোন বিষয়ে পড়তে যাবে সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধে থাকেন। তারা কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তা নির্ধারণ করতে পারেন না। নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাবেন, এমনটাই স্বাভাবিক হওয়া উচিত। তবে দেখা গেছে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই উদ্দেশ্য থাকে স্টুডেন্ট ভিসায় বিদেশে গিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়া বা স্থায়ীভাবে বসবাস করা। সেটা দোষের কিছু নয়। তবে সঠিক বিষয় নির্ধারণ করা অতি গুরুত্বপ‚র্ণ। উন্নত দেশগুলোতে তাদের দেশের বাজারে কোন পেশার কতটুকু চাহিদা সেটার একটা ‘ডিমান্ড লিস্ট’ থাকে, যেখানে সেসব বিষয়ের বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। তো, চাহিদা বেশি, সে পেশাগুলোর বিষয়ে পড়াশোনা করলে চাকরি পেতে সহজ হয়। ডিমান্ড লিস্টে নেই এমন বিষয় নিয়ে পড়তে গেলে এ দিয়ে স্থায়ীভাবে অভিবাসনের জন্যও আবেদন করার সুযোগ থাকে না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এ ছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই ডিমান্ড লিস্টে নেই এমন বিষয়ের টিউশন ফি বেশি দেখা যায়। আবার বিষয় ছাড়াও শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নামধামের কারণেই সেমিস্টার ফি অনেক পার্থক্য হয়। সেগুলো আগেভাগে দেখে নেওয়া ভালো। কারণ অনেকেই এখানে এসে খরচ বেশি বলে বিষয় পরিবর্তন করতে চান। কিন্তু তখন বিষয় পরিবর্তন করা অনেক জটিল হয়ে ওঠে। এমনও হয় এই বিষয় পরিবর্তন করা নিয়ে অনেকের ভিসাও বাতিল হয়ে যায়। তাই বিষয় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপ‚র্ণ। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায় আর অস্ট্রেলিয়ার সরকারের ডিমান্ড লিস্টও ওয়েবসাইটে দেখে আসা যায় নিচের লিংকে:
<িি.িনড়ৎফবৎ.মড়া.ধঁ/ঞৎধা/ডড়ৎশ/ডড়ৎশ/ঝশরষষং-ধংংবংংসবহঃ-ধহফ-ধংংবংংরহম-ধঁঃযড়ৎরঃরবং/ংশরষষবফ-ড়পপঁঢ়ধঃরড়হং-ষরংঃং>
এ ছাড়া, আজকাল এসব বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনেক বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে, সেগুলো ঘেঁটেঘুঁটে দেখতে হবে।
শেষ তারিখ ও সর্বশেষ খবর জানতে হবে
যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে যাওয়ার ইচ্ছে, আবেদন করতে গিয়ে দেখা গেল ভর্তির শেষ সময়টাই পার হয়ে গেছে অথবা ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হলেও দেখা গেল কিছুদিন আগেই নির্বাচিত বিষয়টি ডিমান্ড লিস্ট থেকে বাতিল হয়ে গেছে। তাই যতদ‚র সম্ভব ভর্তি, ভিসা ও কাগজপত্র জমা দেওয়া সংক্রান্ত সকল নির্ধারিত তারিখ ও সর্বশেষ খবর সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। ডিমান্ড লিস্টের হালনাগাদ সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। এ জাতীয় সকল কাজের শেষ খবরাখবরের আপডেট রাখতে হবে নিপুণভাবে।
Discussion about this post