নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় কুয়েত মৈত্রী হলের ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহান শাস্তির মুখে পড়েছেন।
তাঁকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়মে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাঁকে (শবনম জাহান) শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এ ঘটনায় ওই হলের দুজন হাউস টিউটরকে সতর্ক করা হয়েছে।দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে দুটি ছাড়া সব পদে জয় পায় ছাত্রলীগ।
এর আগে ভোটের দিন কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, ব্যালটবাক্স আগে থেকেই জালভোট দিয়ে ভরা হয়েছিল। পরে ব্যালটবাক্স দেখতে চাইলে সেই জালভোট দেয়া ব্যালট পেপার বস্তায় ভরে অন্যত্র সরানোর অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা।
মৈত্রী হলের ছাত্রীরা ভোটকেন্দ্রের সামনে জালভোট দেয়া ব্যালট পেপার নিয়ে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রশাসনের অধীনে কখনই সুষ্ঠু ভোট হওয়া সম্ভব নয়।
এক প্রার্থী বলেন, ব্যালটবাক্স স্টিলের তৈরি হওয়ার কারণে আমরা সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে সেটি চেক করে দেখতে চাই। কিন্তু হলের প্রভোস্ট শবনম জাহান আমাদের সেটি দেখতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ রকম কোনো নিয়ম নেই। পরে অন্যান্য হলে দেখানো হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, প্রক্টর এলে সেটি দেখানো হবে।
পরে ছাত্রীরা হলগেটে দাঁড়িয়ে জাল ব্যালট মাটিতে বিছিয়ে প্রতিবাদ জানান।
শিক্ষার্থীদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত হন প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁদা বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ সেখানে যান। শিক্ষার্থীরা তখন তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।তারা ভোট স্থগিতের দাবি জানান।
ভোটের দিন সকাল ১০টার দিকে কুয়েত মৈত্রী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যালটে ভোট দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই এই হলের প্রভোস্ট ড. শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নতুন প্রভোস্টের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ড. মাহবুবা নাসরিনকে।’
Discussion about this post