নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুললে কতটুকু সিলেবাস পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি। আগামী সেপ্টম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে বা না খুললে কীভাবে পরীক্ষা নেয়া যায়— সেটি সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের জন্য সংশোধিত সিলেবাস প্রণয়ন করার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পর গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এ সময়ের শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে অনলাইনে ও সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী পাঠের বাইরে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবছে না সরকার।
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য সংশোধিত সিলেবাস প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যে দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি রয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৫ মাস ধরে বন্ধ। আগামী সেপ্টেম্বরে যদি স্কুল খোলা হয় তাহলে এক ধরনের প্রস্তুতি আর না হলে আরেক ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
সচিব বলেন, এ বিষয়ে একটি সংশোধিত সিলেবাস তৈরি করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা পরিবর্তিত সময়ে কতগুলো ক্লাস নিতে পারবে- তার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ক্লাসের সঙ্গে পাঠ্য বিষয় মিল রয়েছে সেভাবে সংশোধিত সিলেবাস তৈরি করা এবং বছরের শুরুতেই আমরা সারা বছরের পাঠপরিকল্পনা নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সেটাকেও রিভাইস করতে বলেছি।’
এদিকে প্রাথমিক সমাপনীসহ অন্যান্য ক্লাসের পরীক্ষা কীভাবে আয়োজন করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)। নেপের মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে মিটিং করে কমিটি করে দেব। কমিটি নির্ধারণ করব- কতটুকু সিলেবাস পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।’
সম্প্রতি ঈদুল আজহার পরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার গুঞ্জনকে গুজব বলে জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে নেপ মহাপরিচালক বলেছেন, ‘কবে স্কুল খুলবে এখনো বলা যাচ্ছে না। যে কারণে শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো হতে পারে। মিটিংয়ে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বন্ধের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। গত ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বন্ধের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই। পরীক্ষা অধিকতর যুযোপযোগী করে আয়োজনের লক্ষ্য রয়েছে। সেজন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় বোর্ড গঠনের বিষয়ে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
Discussion about this post