আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তুরস্কের বিশ্ববিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদে প্রায় ৮৬ বছর পর প্রথমবারের মতো নামাজ আদায় হয়েছে। শুক্রবার (২৪ জুলাই) জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে ঐতিহাসিক এই মসজিদটিতে।
এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ঘোষণা করেছিলেন, বিশ্ববিখ্যাত স্থানটি শুক্রবারের নামাজের জন্য প্রস্তুত থাকবে। এ হিসেবে ২৪ জুলাই থেকে এখানে নামাজ শুরু হবে। এরপর এ দিনের জুমার নামাজে মুসল্লিদের সঙ্গে তুর্কি প্রেসিডেন্ট নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
জাদুঘর ঘোষণার ৮৬ বছর পর এটিকে আবারও মসজিদে রূপান্তর করা হয়। এরপর শুক্রবার (২৪ জুলাই) প্রথম জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুত করা হয়। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, তুর্কি কর্তৃপক্ষের রায় হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শুক্রবার ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদে জুমার নামাজ হয়েছে। এখানে ভিড় জমেছ মুসল্লিদের। নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এই মসজিদ প্রাঙ্গণ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়া সোফিয়ায় নামাজ পরিচালনার জন্য তিনজন ইমাম নিযুক্ত করেন। আজান দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় পাঁচজন।
ইস্তাম্বুলের গভর্নর আলী ইয়ারলিকায়া বৃহস্পতিবার বলেছেন, মুসলমানরা উচ্ছ্বসিত। সবাই ঐতিহাসিক মসজিদের এ উদ্বোধনে উপস্থিত হতে চান।
মসজিদটির ভেতরে এবং বাইরে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। করোনা ভাইরাস স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের সুরক্ষা চৌকির মাধ্যমে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রায় ১৫০০ বছরের পুরোনো এই স্থাপনাকে জাদুঘর থাকা অবস্থায় ১৯৮৫ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল ইউনেসকো। এর আগে ১৯৩৪ সালে জাদুঘর ঘোষণা করা হয়েছিল স্থাপনাটিকে। কিন্তু তুরস্কের আদালত জাদুঘর বাতিল করে বলেছেন, মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো ব্যবহার এখানে আইনিভাবে সম্ভব নয়।
ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগ পর্যন্ত ৯১৬ বছর আয়া সোফিয়া গির্জা ছিল। এরপর ১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর এটি মসজিদ ছিল। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম। মূল্যবান এ স্থাপনা বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য।
গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত ১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানোর ডিক্রি বাতিল করে মসজিদে ফিরিয়ে আনার রায় দেন। যার মাধ্যমে আয়া সোফিয়াকে আবারও মসজিদে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়।
গত ১৬ জুলাই তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর মসজিদে রূপান্তরিত হওয়ার পরে আয়া সোফিয়া পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সহযোগিতা প্রোটোকল স্বাক্ষর হয়। প্রোটোকলের অধীনে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের কাজ তদারকি করবে।
Discussion about this post