বিশেষ প্রতিবেদক
আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতি সম্প্রতি পদোন্নতি প্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেনকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আপনি প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের অভিভাবক ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সর্বোচ্চ পদে আসিন আছেন। আমাদের সব চাওয়া পাওয়া, আবেদন নিবেদন সবকিছুই আপনাকে ঘিরে। একমাত্র আপনিই পারেন আমাদের সকল প্রকার চাওয়া পাওয়া ও সমস্যার সমাধান করতে। যা অন্য কারোর পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়।
আপনি আমাদের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। আপনার সময়ে প্রাথমিক শিক্ষায় যে অভাবনীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে যা ইতপূর্ব কখনো হয়নি। এদেশের মানুষ ও প্রাথমিক শিক্ষকগণ আজীবন শ্রদ্ধাভরে আপনার এ অবদানকে চিরকাল কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করবে। তা নিঃসন্দেহে বলা য়ায়।
আপনি আমাদের অভিভাবক হিসেবে পদোন্নতি বঞ্চিত প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আপনার কাছে আমাদের কিছু কথা, সুপারিশ মালা আপনার কাছে তুলে ধরতে চাই— প্রাথমিক শিক্ষায় সকল প্রকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের (সহকারী শিক্ষক থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত) ধারাবাহিক বিভাগীয় পদোন্নতি আছে। একমাত্র প্রধান শিক্ষকদের কোন প্রকার পদোন্নতির সুযোগ নেই। যা অতন্ত্য দুঃখজনকও বটে। দীর্ঘ দিন ধরে প্রধান শিক্ষকগণ বিভাগীয় পদোন্নতি না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। কাজের প্রতি উৎসাহ অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলছেন।
১৯৯৪ সালের এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতি বন্ধ রাখা হয়েছে। ৩০/৩৫ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকগণ একই চেয়ারে ঘুরপাক খেয়ে অবসরে চলে যাচ্ছেন ।
বর্তমানে অনেক উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবীরা এ পেশায় যোগদান করছে। কিন্তু নিম্ন বেতন কাঠামো, পদোন্নতির জটিলতা সহ বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা না থাকাতে, তারা সুযোগ পেলেই অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। যা আমাদের জন্য সুখকর নয়। এখানে উল্লেখ্য যে ৩৪তম বিসিএস থেকে নন কেডার হিসেবে যে সকল প্রার্থী প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেছিলেন তাদের অধিকাংশই বেটার চান্স পেয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। বাকিরা চলে যাবার সুযোগের অপেক্ষায় আছে।
প্রাথমিক শিক্ষার মান্নোয়নের জন্য এদেরকে পদোন্নতি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় ধরে রাখতে হবে। তা নাহলে যুগোপযোগী মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন অধরাই থেকে যাবে। তাই প্রাথমিক শিক্ষার স্বার্থেই অতিদ্রুত প্রধান শিক্ষকদের বিভাগীয় পদোন্নতির জট খুলে দিয়ে পদোন্নতির পথ সুগম করে দিতে হবে। নতুন পদোন্নতির নীতিমালা প্রনয়নে দীর্ঘসূত্রতা হলে উচ্চপদে প্রধান শিক্ষকদের চলতি দায়িত্ব প্রদানের জন্যও সুপারিশ করা হলো।
প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতির নীতিমালায় আমাদের কিছু প্রস্তাবনা ও সুপারিশ নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
১) বিভাগীয় পদোন্নতিতে উচ্চ পদে শতভাগ প্রধান শিক্ষকদের মধ্য থেকে পূরন করতে হবে।
২) ১৯৯৪ ইং সনের পূর্বের পদোন্নতির নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
৩) পদোন্নতিতে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৪) বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোন প্রকার লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি থাকবেনা, তবে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।
৫) বিভাগীয় পদোন্নতিতে বয়সের কোন বার থাকবেনা। অথাৎ চাকুরি থেকে অবসরের যাবার পূর্বের দিন পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ থাকতে হবে।
৬)সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইউআর সির সহকারী ইনসট্রাক্টর, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সমমানের অনুরুপ প্রশাসনিক পদে পদোন্নতির সুযোগ থাকতে হবে।
৭) যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না তাদেরকে উচ্চতর গ্রেডে বেতন প্রদান করতে হবে।
নিবেদক
মোঃ বদরুল আলম (মুকুল)
সভাপতি,
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি
Discussion about this post