অনলাইন ডেস্ক
মহামারী করোনাভাইরাসে শিশুরা বয়স্কদের তুলনায় কম আক্রান্ত হলেও তারা এই ভাইরাসের নীরব শিকার। করোনার কারণে শিশুরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
করোনার কারণে স্কুল বন্ধ ও বেশিরভাগ শিশু ঘরবন্দি জীবন কাটাচ্ছে। এতে তাদের মানসিক, শারীরিক ও আত্মিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার বলেন, শিশুরা করোনায় আক্রান্ত কম হলেও তারা এই ভাইরাসের নীরব শিকার। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত। আর ঘরবন্দি থাকার কারণে তারা খেলাধুলা করতে পারছে না।
তিনি বলেন, করোনায় বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে।
করোনায় শিশুদের যেসব ক্ষতি-
পুষ্টির অভাব
করোনার কারণ অনেক পরিবারের কর্তা চাকরি হারিয়েছেন এবং আয় কমে যাওয়ার কারণে পরিবারে খাদ্যসংকটের কারণে শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে।
খাবারের অভাবে অনেক শিশু সুষম পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে তাদের লম্বায় বড় হওয়া, ওজন বাড়া এসব কমে যাচ্ছে।
শিশুর পুষ্টির অভাব হলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকবে।
মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত
করোনার কারণে শিশুরা এমনিতেই মানসিক চাপে ভোগে। স্কুল নেই, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই, খেলা নেই এবং ঘরের চার দেয়ালে বন্দি তারা। ঘরে বসে থাকার কারণে শিশুরা একাকীত্বে ভোগে এবং বুদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আচরণগত পরিবর্তন
বাবা-মায়ের ভাইরাস সংক্রমণ, রোজগার আর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে তাদের ওপরও।
এ ছাড়া সম্প্রচারমাধ্যমে করোনায আক্রান্ত ও মৃত্যুর বিষয়গুলো শিশুদের মনের ওপর প্রভাব ফেলছে।
আর হঠাৎ করে তার স্বাভাবিক রুটিনের পরিবর্তনের ফলে স্কুলে যেতে পারছে না, খেলতে যেতে পারছে না, যা আবেগ ও আচরণের মধ্যে একটা পরিবর্তন আনছে। ফলে অকারণে জেদ ও কান্না করছে।
বিষণ্ণতা, মানসিক ট্রমা
বাবা-মায়ের মানসিক চাপের কারণে শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বেড়ে যেতে পারে, যা শিশুরা বুঝতে পারছে না।
এতে বাবা-মায়ের ওপরে তার ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে ও সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আর দরিদ্র পরিবারের শিশুরা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে ক্ষুধা, অপুষ্টি, শিশুশ্রমের সঙ্গে শিশুদের মনে নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘমেয়াদি একটা ট্রমা রেখে যাবে করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারী।
Discussion about this post