পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আরবি আজহা এবং কোরবান উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কোরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা, অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া প্রভৃতি।
ঈদ হাসতে শিখায়,ঈদ ভালোবাসতে শিখায়,ত্যাগের মহিমা শেখায়,ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা আমাদের শুধু আনন্দই দেয়না মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ও অনৈক্য ভুলে গিয়ে পরস্পরকে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধনে আবদ্ধ করে এবং সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে শেখায়।
ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত প্রতি বছর ঈদুল আযহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। স্বার্থপরতা পরিহার করে মানবতার কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা কোরবানির প্রধান শিক্ষা। হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-ক্রোধকে পরিহার করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিবেদিত হওয়া আমাদের কর্তব্য।
কোরবানির যে মূল শিক্ষা তা ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত করে মানব কল্যাণে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ সম্ভব। বিশ্বাসী হিসেবে সে চেষ্টায় নিমগ্ন থাকা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য।
করোনাভাইরাসের মহামারির এই নিদানকালে খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে বন্যা! চারিদিকে হাজারো নিপীড়িত প্রাণের আহাজারি। তাই এই ঈদুল আযহা আমাদের জন্য দারুণ একটি সুযোগ নিয়ে এসেছে ত্যাগী হয়ে উঠার । আমরা যে আল্লাহর রাহে কোরবানী দিয়েছি তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে হবে এই ত্যাগের মাধ্যমে। নিজের সামান্য ইচ্ছাকে ত্যাগ করাও কোরবানি। কিন্তু সব চেয়ে বড় কোরবানি হচ্ছে আত্মজ কিছু ত্যাগ করা। যে জিনিসের সাথে আত্মার সম্পর্ক, তাকে ত্যাগ করা মানে সর্বোচ্চ ত্যাগ। সেই সর্বোচ্চ ত্যাগ করার জন্যই তো এই ধর্মীয় নির্দেশ এসেছিল। আর যুগে যুগে কালে যারা যত বিলিয়ে দিতে পেরেছেন ত্যাগ করতে পেরেছেন তাঁরাই অনন্ত প্রশান্তি ও সম্মান লাভ করেছেন। তাই আমরা ঈদের আনন্দ এক সাথে ভাগ করে নিব এক কাতারে মিলে।পরম মমতায় দাঁড়াব বিপন্ন মানুষগুলোর পাশে। তবে যাই করিনা কেন তা হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার নিরোধের রীতি মেনেই ।
Discussion about this post