নিউজ ডেস্ক
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আবুধাবি যান রাহাত আহমেদ রাফি (২৬)। সেখানে ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। এর আগে বাংলাদেশে থাকার সময় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রাহাত আহমেদ রাফি। তার ধারাবাহিকতায় আবুধাবিতে গিয়েও রেডক্রিসেন্টের সঙ্গে যুক্ত হন। এরই মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে টিকা আবিষ্কারে কাজ শুরু করে বিভিন্ন দেশ।
চীনের তৈরি টিকার পরীক্ষা চলছে আবুধাবিতে। চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের সঙ্গে যৌথভাবে আবুধাবির স্বাস্থ্য অধিদফতর এই পরীক্ষা শুরু করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে সেই টিকা উদ্ভাবনে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশি তরুণ রাহাত আহমেদ রাফি।
রাফি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মী প্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে ব্যবসায়ী আব্দুল মতিনের ছেলে। আবুধাবিতে ব্যবসা করছেন। ৬ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় তিনি। প্রবাসে থেকেও মানবসেবায় এগিয়ে এসেছেন এই যুবক। অংশ নিয়েছেন করোনা ভাইরাসের টিকা উদ্ভাধনের পরীক্ষায়। নিজের অভিজ্ঞতা এবং এই টিকায় অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমে।
তিনি জানান, প্রথমে যখন জানতে পারি করোনাভাইরাসের টিকার জন্য স্বেচ্ছাসেবী চাওয়া হচ্ছে তখন আমিও ইচ্ছুক হলাম। করোনার এই সময়ে মানবসেবায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটে নাম তালিকাভুক্ত করি। এরপর কয়েকদিন পরই আমার সঙ্গে আবুধাবির স্বাস্থ্য অধিদফতর যোগাযোগ করে আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। এরপর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়।
তিনি বলেন, আমি শারীরিকভাবে করোনা ভাইরাসের টিকা পরীক্ষার জন্য ফিট হওয়ার পর ২৪ জুলাই আমার শরীরে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয় এবং ২১ দিন পর ১৫ আগস্ট সকালে আবার দ্বিতীয় ডোজ দেয়। আমার জানামতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আমিই এই টিকার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রথম থেকেই আমার কোনো ভয় লাগেনি। প্রথম প্রথম একটু মাথা ঘুরানো ছাড়া আমার আর কোনো সমস্যা হয়নি। বর্তমানে আমি সুস্থ আছি। তবে এই টিকার প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোনো কিছু হলেও আমার আফসোস নেই। আজ হোক কাল হোক এমনিতেই মারা যেতে হবে। কিন্তু যদি মানুষের জন্য এবং এই কঠিন পরিস্থিতে কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তার জন্য যদি আমার সামান্যতম অবদান থাকে সেটাই আমার কাছে জীবনের সার্থকতা।
টিকা দেয়ার পর থেকেই তারা সময়ে সময়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। জেনেছি আগামী এক বছর এভাবেই খবর রাখবে। নিয়মিত নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে তিনদিন পর পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রাফি স্থানীয় সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে জানান, আবুধাবি এবং আল আইন শহরে পরীক্ষায় অংশ নিতে সাত হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী নাম তালিকাভুক্ত করেন। সবমিলিয়ে ১৫ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। দেশটিতে প্রথম টিকা নিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রধান। আমার জানামতে আমিই একমাত্র বাংলাদেশি।
Discussion about this post