নিউজ ডেস্ক
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতো। তবে তাঁকে শহীদ করে দেশের অগ্রগতি রোধ করা যায়নি। কারণ তাঁর দূরদর্শী কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।’
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ আগস্ট লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূতাবাস ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এ কথা বলেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের অনাবাসী রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিমের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং যুক্তরাজ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসা, গ্রাহক ও শ্রম বাজার-বিষয়ক মন্ত্রী এবং লন্ডন-বিষয়ক মন্ত্রী পল স্কালি অতিথি হিসেবে জুম ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সভায় অংশ নেন। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের গল্প রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুত বিকাশ এবং সমৃদ্ধির আখ্যান।’ এ সময় ভূমিমন্ত্রী ছোটকালে তাঁর বাবার সঙ্গে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার একটি ঘটনা স্মৃতিচারণ করেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা করেন, দু’দেশের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের সফরের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য ২০২১ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশতম বর্ষ উদযাপন করবে। একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য ভূমিমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এইচ টি ইমাম বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বনেতা হিসাবে অভিহিত করে বলেন, ‘তিনি বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের গর্বিত করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হয়তো তাঁর রূপকল্প বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, তবে সৌভাগ্যবশত তাঁর কন্যা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করছেন।’
ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাতীয় শোক দিবস পালনে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার অ্যাডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটি যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ দলীয় রাজনীতিকে অতিক্রম করে লেবার ও কনজারভেটিভ উভয় রাজনৈতিক দলেই সমান গুরুত্ববহন করতো।’ তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতায় বঙ্গবন্ধুর দেশ গঠনের অভূতপূর্ব তৎপরতা এবং বিগত দশকে বিশ্ব আর্থসামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাঞ্জেলা রায়নার এবং ব্রিটিশ সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী বিশেষ অতিথি হিসাবে স্মরণ আলোচনা সভায় যোগ দেন। এছাড়াও বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শীর্ষ সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরিফ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী নওয়াজ আহমেদ, বিবিসি বাংলা প্রধান সাবির মুস্তাফা বিশেষ অতিথি হিসাবে ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সভায় অংশ নিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মুক্তির জন্য পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতসহ তিনটি পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠ, বিশেষ প্রার্থনা (মুনাজাত) এবং এক মিনিটের নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতি উৎসর্গীকৃত আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেন যৌথভাবে ভূমিমন্ত্রী ও হাইকমিশনার। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ভূমিমন্ত্রী, হাইকমিশনারসহ হাইকমিশনার কর্মকর্তারা।
ডেপুটি হাই কমিশনার মুহাম্মদ জুলকার নাইন, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রশিদ, মিনিস্টার (কনস্যুলার) মো. লুৎফুল হাসান, মিনিস্টার (প্রেস) আশেকুন নবী চৌধুরীসহ হাইকমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্মরণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
Discussion about this post