নিজস্ব প্রতিবেদক
চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই মহামারীর মধ্যে ক্যাথলিক চার্চ পরিচালিত নটর ডেম, হলিক্রস, সেন্ট জোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরি কলেজকে ভার্চুয়ালি ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু এই ভর্তি কার্যক্রমের শুরুতেই বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। গতকাল রোববার দুটি কলেজে ডেমো টেস্টের জন্য নির্ধারিত দিন থাকলেও শিক্ষার্থীরা দিনভর চেষ্টা করেও নির্দিষ্ট লিংকে ঢুকতে পারেনি।
আবার একইভাবে যে শিক্ষার্থী হলিক্রস কলেজে আবেদন করেছে তার প্রবেশপত্র এসেছে নটর ডেম কলেজের। অর্থাৎ মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য ছেলেদের কলেজের প্রবেশপত্র এসেছে। এ নিয়ে হাস্যরস সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায় পড়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে দেশের সব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে জিপিএর ভিত্তিতে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে আদালতের আদেশে চার্চ পরিচালিত চার কলেজ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। কিন্তু এবার চলমান করোনা পরিস্থিতির জন্য ক্যাথলিক চার্চ পরিচালিত এই চার কলেজে ভার্চুয়াল পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা বোর্ড। এতে ৯ থেকে ২৪ আগস্টের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।
হলিক্রস গত ৯ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু সার্ভার জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে না পারায় গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। এর পরও অনেকেই আবেদন করতে পারেনি। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ডেমো টেস্টের জন্য সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ওয়েবসাইটে দেওয়া লিংকে শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ঢুকতে পারেনি। গতকাল রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই ডেমো টেস্টের সময় বাড়ানোর পরও অনেক শিক্ষার্থী ঢুকতে ব্যর্থ হয়। সেন্ট জোসেফে ডেমো টেস্ট নেওয়ার কথা থাকলেও সেখানেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এই অবস্থায় আগামীকাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল ভর্তি পরীক্ষার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে নটর ডেম ও সেন্ট জোসেফের। গতকাল হলিক্রসের চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে জানানোর কথা থাকলেও রাত ৯টা পর্যন্ত তারা তা জানায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘আমরা হলিক্রসের ডেমো টেস্টের জন্য দিনভর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু ঢুকতে পারিনি। এমনকি আমাদের পরিচিত যারা আবেদন করেছিল তাদের কেউই ঢুকতে পারেনি। আমরা কলেজের হেল্পলাইনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও চেষ্টা করে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু শত চেষ্টার পরও লিংকে ঢোকা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থা যদি চূড়ান্ত পরীক্ষার সময়ও হয়, তাহলে কী হবে? আমরা খুবই চিন্তায় আছি।’
এদিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘সারা দেশের সব কলেজে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তি আবেদন গ্রহণ করা হলেও চার্চ পরিচালিত চার কলেজ আলাদাভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। আমাদের এখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থী আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। যদি চার্চ পরিচালিত চার কলেজের ভর্তিতে সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
Discussion about this post