বিশেষ প্রতিবেদক
দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর প্রায় ৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হওয়ায় কবে নাগাদ বন্ধ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে তাও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৩টায় এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গণিতসহ পাঁচটি বিষয়ের ওপর ক্লাস থাকবে।
এছাড়া নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়ভিত্তিক ক্লাসসহ মোট ১৩টি বিষয়ের ওপর ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জুম অ্যাপস এবং ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে এই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।
কার্যক্রম পরিচালনা করতে ইতোমধ্যে নগরের সরকারি স্কুলের বাছাইকৃত শিক্ষকদের নিয়ে প্রতিটি বিষয়ের জন্য ১০ জন করে ‘শিক্ষক প্যানেল’ গঠন করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহের শুরুতে ক্লাস রুটিন প্রকাশের পর দৈনিক ৪ থেকে ৬টি বিষয়ের ওপর ঘণ্টাব্যাপী ক্লাস নেবেন এসব শিক্ষকরা।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এজেডএম শরীফ হোসেন জানান, করোনার কারণে থমকে যাওয়া শিক্ষাকার্যক্রমে গতি আনতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে টিভিসহ কয়েকটি মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হলেও সেখানে শিক্ষকরা শুধু লেকচার দিয়ে চলে যান। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার বা তাদের সমস্যা সমাধানের কোনো সুযোগ সেখানে নেই।
‘এই কারণে আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করছি। এর মাধ্যমে শিক্ষক যেমন বিষয়ভিত্তিক লেকচার দেবেন, তেমনি কোনো শিক্ষার্থী কোনো টপিক বুঝতে না পারলে তার প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে। ’
যেভাবে পরিচালিত হবে শিক্ষা কার্যক্রম
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এজেডএম শরীফ হোসেন বলেন, প্রতি সপ্তাহের শুরুতে আমরা জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেইজে একটি ক্লাস রুটিন প্রকাশ করবো। রুটিনে উল্লেখিত নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট বিষয়ে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে শিক্ষক ক্লাস নেবেন।
তিনি বলেন, ধরুন- কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির গণিতের একজন শিক্ষক জুম অ্যাপসের মাধ্যমে তার স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য লেকচার দেবেন। সেটা আমরা শেয়ারিং এর মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেইজে লাইভ দেবো। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক কথা বলার সুযোগ সেখানে থাকবে।
এজেডএম শরীফ হোসেন বলেন, স্কুলের শ্রেণিকক্ষে যেমন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালিত হয়, আমাদের এই সমন্বিত অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমেও ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ থাকবে। অনলাইনের মাধ্যমে যে কোনো শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে।
‘করোনার কারণে অনেক অভিভাবকের আয় কমে গেছে। অনেকে বাসায় টিউটর রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। তাই আমরা সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাধ্যমিক শ্রেণিকে বাছাই করেছি। আশা করি, এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। তাদের পড়াশোনায় গতি আসবে। ’
Discussion about this post