নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা আগামী নভেম্বর মাসে আয়োজন করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার রাতে একটি গণমাধ্যমের আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সম্পর্কে বলেন, এই পরীক্ষা যেন নভেম্বরে হয়, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা পাঠাচ্ছি। এটি অনুমোদন হয়ে এলে আমরা আপনাদের জানাব।’
আর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এখনো সময় আছে, কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার পরিস্থিতি এখনো হয়নি। পরীক্ষা শেষে যদি ফেব্রুয়ারিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কারণে সেশনজট হবে না।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ বছর হচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষা না নেওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এই তথ্য জানান।
এর আগে গত ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পিইসি পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। একই বৈঠকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা না নেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছিল। তবে তখন জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০২০ সালের প্রাথমিক সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা গ্রহণ না করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। তাই আমরা এ বছর এই দুটি পরীক্ষা নিচ্ছি না। যদি স্কুল খোলা যায় তাহলে বিভিন্ন পদ্ধতিতে স্কুলেই বার্ষিক পরীক্ষা নেব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা ক্ষতির মুখে ফেলতে চাই না। এ জন্য যা যা করা সম্ভব তা আমরা করব।’ এবার পিইসি পরীক্ষা হবে না বলে প্রাথমিকে বৃত্তিও দেওয়া হবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কোন বিষয়ের পরীক্ষা কমানোর সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো বলিনি যে পরীক্ষা কমিয়ে ফেলব। আমি বলেছি, কোনো কোনো দেশে পরীক্ষার সংখ্যা কমিয়েছে। কোথাও পরীক্ষা ছাড়া অটো-প্রমোশনও হয়েছে। একেক দেশে একেকভাবে সমস্যা সমাধান করেছে। আমরা এর কোনোটির কথাই বলছি না। এগুলো নানান রকমের চিন্তাভাবনা। কে কী করছে তা দেখছি, কোনটা কত ভালো তা দেখছি। কতটা মন্দ সেটাও খতিয়ে দেখছি। তবে এখন পর্যন্ত এইচএসসি পরীক্ষার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার পরিস্থিতি হয়নি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে ক্লাস শুরু করতে মার্চ মাস পর্যন্ত হয়ে যায়, তাই ফেব্রুয়ারির মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারলেও কোন সমস্যা হবে না বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ক্লাস শুরু হয় কবে? শুরু হতে হতে মার্চ মাসের আগে সাধারণত হয় না। আমরা যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করতে পারি, তাহলে যারা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা ক্লাসের ক্ষেত্রে এক দিনও সময় নষ্ট হবে না।
Discussion about this post