নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাঙ্গনগুলোকে মাদক ও র্যাগিংমুক্ত রাখতে হবে। এর জন্য শিক্ষকদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। সবাইকে এ কাজে সচেষ্ট হতে হবে। প্রয়োজনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন করতে হবে। এগুলো করা গেলে ক্যাম্পাসগুলোতে সত্যিকারের সোনার মানুষ তৈরি হবে, যারা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে পারবে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই কেবল শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, প্রত্যেকের জন্য পাঠ্য। বঙ্গবন্ধুকে যত জানব, তাকে ধারণ করতে পারব, ততই আমরা বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারব। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গবেষণা ও প্রকাশনা বাড়িয়ে র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেতে জোর দিতে পরামর্শ দেন।\হতিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অনেক প্রজন্মকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে বহু বছর অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখা হয়। ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত তারা সঠিক ইতিহাস জানত না।
`৭৫-এর হত্যাকারীরাই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা বুঝতে চাইলে আওয়ামী লীগের জন্মকালীন ইশতেহার ও `৭০ সালের নির্বাচনী মেনিফেস্টো দেখতে হবে। স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও জাতীয়করণ এবং কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন।\হশেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা কমিশন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়ে গেছেন। ইউজিসি প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হলেও যারা এর নেপথ্যে ছিল তাদের বিচার হয়নি। তাদের বিচারও হওয়া উচিত। জাতির পিতার সঙ্গে নিজের দীর্ঘ স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, যারা ইনডেমনিটি দিয়েছিল তাদের বিচারও করতে হবে। একটি কমিশন গঠন করা হবে শুনছি, আমার জীবদ্দশায় যেন তা দেখে যেতে পারি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেনজির আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী এবং এ অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক নুরুল ফজল বুলবুল।\হএ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একটি বাণী পড়ে শোনান শেখ কবির হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর ওপরে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, করোনার সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন শিক্ষা চালু করে পথিকৃতের ভূমিকা নিয়েছে। অনলাইন ক্লাস করতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেসব সুবিধা দেওয়া হবে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও যেন একই সুবিধা দেওয়া হয়। তিনি জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসঙ্গে বড় করে উদযাপন করবে।পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল বিত্তবানদের সন্তানরা পড়েন না, দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও পড়েন। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে সবার আগে এগিয়ে এসেছে।শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হতো না, শিক্ষার এত বিস্তার হতো না, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও গড়ে উঠতে পারত না। উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিনিয়োগের এত সুযোগ সৃষ্টি হতো না।ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, শিক্ষার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি শিক্ষাকে কোনো সুযোগ নয়, অধিকারে পরিণত করেছিলেন। আর সে কারণেই তিনি স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ করেছিলেন।
Discussion about this post