ডা. মো. আব্দুল হাফিজ (শাফী)
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের অনেক রোগী প্রশ্ন করে থাকেন যে, তারা খাবার স্যালাইন খেতে পারবেন কিনা?
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীর পানি ও লবণ হারায়। খাবার স্যালাইন সেই পানি-লবণের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। খাবার স্যালাইনে থাকে পানি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও গ্লুকোজ বা শর্করা।
এই সোডিয়াম (লবণ) ও গ্লুকোজ থাকায় অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীরা স্যালাইন খাবেন কিনা, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েন।
কারণ উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের লবণ কম খেতে বলা হয় এবং ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজ বা চিনি খেতেও নিষেধ করেন চিকিৎসকরা।
আর খাবার স্যালাইনের প্যাকেটে লবণ ও গ্লুকোজের মিশ্রণ থাকে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা কি স্যালাইন খেতে পারবেন-
খাবার স্যালাইনে থাকা গ্লুকোজের প্রধান কাজ পেটের অন্ত্রে লবণ শোষণে সাহায্য করা। প্রতি লিটার খাওয়ার স্যালাইনে গ্লুকোজের পরিমাণ ২০ গ্রামের বেশি নয়; এবং এর প্রায় পুরোটাই আমাদের অন্ত্রে শোষণে ব্যবহৃত হয়। তাই ডায়রিয়ায় স্যালাইন খেলে ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তে শর্করা বাড়বে—এমন ধারণা ঠিক নয়।
স্যালাইন মূলত লবণের ঘাটতি পূরণ করার কাজে ভূমিকা রাখে। শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে লবণের ভারসাম্য রক্ষা করাটা খুবই জরুরি। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে আমরা প্রচুর লবণ হারাই। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীরও ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে হবে। এতে লবণের আধিক্য হবে না বা রক্তচাপও বাড়বে না।
ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়ার মাধ্যমে পানি-লবণের ঘাটতি দ্রুত পূরণ না করলে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়বে। পানিশূন্যতা থেকে কিডনি অকার্যকারিতাও হতে পারে।
যেসব ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীর আগে থেকেই কিডনির সমস্যায় ভোগার ইতিহাস থাকে, ডায়রিয়ায় তাদের আরও বেশি জটিলতা হতে পারে।
তাই ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা করতে বয়সভেদে অবশ্যই খাবার স্যালাইন খেতে হবে।
ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে দেখবেন ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা রক্তচাপ মাপাবেন।
লেখক:
বিসিএস (স্বাস্থ্য)
নাক-কান-গলা বিভাগ
বিএসএমএমইউ (প্রেষণে), ঢাকা।
Discussion about this post