নিজস্ব প্রতিবেদক
২০১৮ সালের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে কলেজ শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের অনুপাত প্রথা ও পদোন্নতি বৈষম্য দূর হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে নীতিমালা সংশোধনী সংক্রান্ত একটি বৈঠক ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনলাইন বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন। বৈঠকে নীতিমালা সংশোধন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আনা হয়েছে।
বৈঠকে নীতিমালা সংশোধনের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণে যা কিছু প্রয়োজন সরকার তাই করে যাচ্ছে এবং করে যাবে। এ কারণেই নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নীতিমালায় যে অসঙ্গতি রয়েছে তা নিরসনের জন্য কাজ করা হচ্ছে। এতে শিক্ষকদের চলমান সমস্যা সমাধান হবে।’
জানা গেছে, বেসরকারি কলেজের শিক্ষকরা চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রভাষক হিসেবে নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। ১০ বছর পর পদোন্নতি পেয়ে (ষষ্ঠ গ্রেড) সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান। তবে প্রভাষকদের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন ৫ জনের মধ্যে ২ জন। সহকারী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে ষষ্ঠ গ্রেডে বেতন পেলেও সহকারী অধ্যাপক হতে না পারা প্রভাষকরা ১০ বছর পর উচ্চতর স্কেল পেয়ে অষ্টম গ্রেডে বেতন পান মাত্র ২৩ হাজার টাকা। নবম গ্রেড থেকে উচ্চতর গ্রেড অষ্টম গ্রেড পেয়েও বেতন বাড়ে মাত্র এক হাজার টাকা। এরপর এমপিওভুক্তির ১৬ বছর পূর্তিতে প্রভাষকরা সপ্তম গ্রেড পান, যা ২০১৮ সালের নীতিমালার আগে আট বছরেই পেতেন। এরপর চাকরি জীবনে ইনক্রিমেন্ট ছাড়া আর কোনও গ্রেড নেই তাদের।
বেসরকারি কলেজের প্রভাষকদের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন ৫ অনুপাত ২ জন। নীতিমালা জারির পর থেকেই এই অনুপাত প্রথা বাতিল চেয়ে আসছেন শিক্ষকরা। সরকারি কলেজে প্রভাষক হয়ে যোগদানের পর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলেই অধ্যাপক পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি কলেজে শিক্ষকদের সে সুযোগ নেই। আর এ কারণে ২০১৮ সালের নীতিমালা প্রণয়নের আগে থেকেই শিক্ষকরা পদোন্নতি বৈষম্য দূর করতে আন্দোলন করে আসছেন।
শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপকের বহু বছরের অনুপাত প্রথা শিথিল করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। সংশোধিত নীতিমালা জারির পর চাকরির ১০ বছর পূর্তি হলেই কর্মরত প্রভাষকদের অর্ধেক সহকারী অধ্যাপক হতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে চাকরিতে জ্যেষ্ঠতার জন্য ১৫ নম্বর, প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হাজিরার জন্য ১০ নম্বর, এসিআরের ওপর ১০ নম্বর, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য ১০ নম্বর, গবেষণাসহ বিভিন্ন যোগ্যতার ওপর মোট ১০০ নম্বর যোগ্যতার সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করতে একটি সাব কমিটি করে দিবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি যোগ্যতার সূচক নির্ধারণ করে দেবে।
Discussion about this post