নিজস্ব প্রতিবেদক
এমপিওভুক্ত হতে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা শিক্ষা অফিস, এমনকি আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হাতে শিক্ষকদের হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এক শ্রেণির অসাধু প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সভাপতি ও কোনও কোনও কর্মকর্তা শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেন। অনেক সময় এমপিওর আবেদনও অযৌক্তিক বা তুচ্ছ কারণে রিজেক্ট করে দেয়া হয়।
এ ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমপিওভুক্ত হতে শিক্ষকদের হয়রানি করলে সভাপতি বা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া শিক্ষকদের হয়রানি করলে সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে। আর এমপিওর আবেদন অগ্রায়নে দেরি করলে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়ে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
আদেশে বলা হয়েছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পরিচালক পরিচালকদের সর্বোচ্চ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষকদের এমপিও আবেদন অগ্রায়ন বা নিষ্পত্তি করতে হবে। এর থেকে দেরি করলে যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। কোন অনৈতিক সম্পৃক্ততায় এমপিও আবেদন অগ্রায়নে দীর্ঘসূত্রিতার প্রমাণ পেলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, এমপিওর আবেদন করতে শিক্ষকদের কাগজপত্র সরবরাহ বা স্বাক্ষর করতে অনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকলে বা অযৌক্তিক কারণে দেরি করলে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতিকে অব্যাহতি দিয়ে তার পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে। একইসাথে সভাপতির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষকদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক সময় প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সভাপতিরা এমপিওভুক্তির আবেদনের অনুমোদন দেয়ার জন্য ঘুষ দাবি করেন, রেজুলেশনে সই করা ও সভা আহ্বান করতেও টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের কোনও কোনও জেলা- উপজেলা শিক্ষা অফিস বা আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয় এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছেও শিক্ষকরা হয়রানির শিকার হন। এ জটিলতা নিরসন করতে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে এমপিওভুক্তির আবেদন নিয়ে শিক্ষকদের হয়রানি করার অনেক অভিযোগ আছে। অনেক সময় সভাপতি আবেদন করতে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দিতে শিক্ষকদের হয়রানি করে থাকেন। এ বাবদ টাকাও দাবি করা হয়। আবার মাঠ পর্যায়ে থেকেও শিক্ষকদের এমপিও আবেদন অগ্রায়ন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়। এ জটিলতা নিরসনে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যৌক্তিক কারণ ছাড়া শিক্ষকদের এমপিও আবেদন অগ্রায়ন না করলে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর কোন অনৈতিক সম্পৃক্ততায় সভাপতি যদি শিক্ষকদের এমপিও আবেদন করতে যথাযথ কারণ সরবরাহ করতে দেরি করেন বা হয়রানি করেন তাহলে তার পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে। একইসাথে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post