অনলাইন ডেস্ক
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে সম্মত হয়েছে ভারত ও চীন। পূর্ব লাদাখে সৃষ্ট উত্তেজনা থেকে বেরিয়ে আসতে পাঁচ দফা পরিকল্পনার বিষয়ে একমত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ দুটি।
মস্কোতে চলমান সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্মতিতে পৌঁছান। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে এ বৈঠকের উদ্যোগ নেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
আজ শুক্রবার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই মন্ত্রীর ‘খোলামেলা এবং গঠনমূলক’ আলোচনায় পাঁচটি পরিকল্পনায় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনে পরিকল্পনা মধ্যে রয়েছে, সীমান্তের সম্মুখসারির সেনা ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সব চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলা; শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং পরিস্থিতি উত্তেজক করে তুলতে পারে এমন সব কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন যে সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি কোনো পক্ষের স্বার্থের অনুকূল নয়। সে কারণে উভয়পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর উচিত তাদের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া, দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া, যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখা এবং উত্তেজনা নিরসন করা- এ ব্যাপারে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছেন।
ভারত-চীন সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে যেসব ধারাবাহিক সম্মতি তৈরি হয়েছিল তার থেকে নির্দেশনা নেয়া উচিত বলেও দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন। এটি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর মধ্যকার বৈঠকের দিকেই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া উভয় দেশই চীন-ভারত সীমান্ত প্রশ্নে বিশেষ দূত মারফত আলোচনা ও যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও একমত হয়েছে।
গত মে মাস থেকে লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী। জুনে এক প্রাণঘাতী সংঘাতের পর সম্প্রতি দুই দেশই ৪৫ বছর পরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে। সীমান্তে ভারতের উল্লেখ্যযোগ্য পরিমান ভূমি চীন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে।
প্রথম দফা সহিংসতার পর রাশিয়ার হস্তক্ষেপেই প্রতিবেশী দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোনে কথা বলেন। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি শান্ত না হয়ে বরং আরো জটিল হয়ে গেছে। পরে এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে বৈঠকের উদ্যোগ নেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
সূত্র: এনডিটিভি
Discussion about this post