আরোপিত শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাদরাসাটি বন্ধ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আদেশে জারি করেছে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারের দাবি পূরণ না হওয়ায় আজও বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, আরোপিত শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল-জামিয়াতুল তাহলিমা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসা পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ থেকে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
এদিকে মাদরাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারের দাবিতে গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছে হাজারও শিক্ষার্থী। দাবি পূরণ না হওয়ায় আজও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে মাদরাসার বর্তমান মুহতামিম শফীকে মা’যুর (অক্ষম) উল্লেখ করে কর্মক্ষম নতুন মুহতামিম নিয়োগসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হাটহাজারী মাদরাসা, হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদরাসা বোর্ডের (বেফাক) ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে,শফী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে মাদরাসার প্রশাসনিক তদারকিতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। একাধিকবার তাকে দেশে বিদেশে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নিজের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় শফী দাফতরিক কাজে ছোট ছেলে আনাস মাদানীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই সুযোগে আনাস মাদানী হেফাজতে ইসলাম ও হাটহাজারী মাদরাসায় নিজের বলয় বাড়াতে তৎপরতা শুরু করেন।
জানা গেছে, শফীর প্রেস সচিব মুনির আহমদকে কোনো নোটিশ ছাড়াই দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর থেকেই আনাস মাদানীর প্রভাব,মাদরাসার ভেতরে প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয়গুলো আলোচনায় আসে।
আনাস মাদানীর প্রভাবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই কমপক্ষে ১১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বিনা কারণে মৌখিক নির্দেশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার থেকে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করছে মাদ্রাসার শিক্ষাথীরা। এ সময় মাদ্রাসার পরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীসহ বিভিন্ন শিক্ষকের রুমে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওদিন রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও লাঠি হাতে পুরো মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মাদ্রাসার সব গেট তালাবদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি সহকারী পরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ, মুফতি জসিম ও মাওলানা ওমরের রুমে ভাঙচুর চালানো হয়।
Discussion about this post