অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেইপ প্রকল্পের আওতায় ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত লেদার গুডস ও ফুটওয়্যার শিল্পে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ পাবে ১০ হাজার বেকার। ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন বা পঞ্চম শ্রেণি পাস হলেই ভর্তি হওয়া যাবে। প্রশিক্ষণকালীন দেওয়া হবে ভাতা। দক্ষতা দেখাতে পারলে মিলবে চাকরিও। বিস্তারিত জানাচ্ছেন ফরহাদ হোসেন
লেদার গুডস ও ফুটওয়্যার শিল্পে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে মে ২০১৬ থেকে। প্রথম ধাপে চার হাজার ৮৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ নেওয়া মোট ৯৩ শতাংশ দক্ষ প্রশিক্ষণার্থীকে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ শতাংশ নারী কর্মী। নতুন করে জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আরো ১০ হাজার ১৪০ জনকে এ শিল্পে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। অর্থায়ন করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রগ্রাম (সেইপ) এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। সারা দেশে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সদস্যভুক্ত লেদার গুডস ও ফুটওয়্যার শিল্পের কম্পানিগুলো।
বিষয়
ও
আবেদনের
যোগ্যতা
ওয়ার্কার বা কর্মী লেভেলে
পাঁচ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া
হবে। বিষয়গুলো হলো—কাটিং মেশিন
অপারেশন, সুইং মেশিন অপারেশন,
সেটিং অপারেশন (ফুটওয়্যার), লাস্টিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলিং অপারেশন (ফুটওয়্যার) এবং সেটিং অ্যাসেম্বলিং
অপারেশন (লেদার গুডস)। দুই মাস মেয়াদি
এসব প্রশিক্ষণে ভর্তির জন্য লিখতে-পড়তে জানলেই চলবে।
তবে পঞ্চম শ্রেণি বা
ততোধিক পড়ালেখা জানাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বয়সসীমা
১৮ থেকে ৪৫ বছর।
বিভিন্ন কারখানায় মধ্যম মানের কর্মী
হিসেবে কর্মরতদের প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো হলো স্ট্যান্ডার্ড সোশ্যাল
কমপ্লায়েন্স ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি,
টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (টিকিউএম), সুপারভাইজরি, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লিডারশিপ স্কিল ডেভেলপমেন্ট, প্রডাক্টিভিটি
ইমপ্রুভমেন্ট টেকনিক এবং প্যাটার্ন
মেকিং, গ্রেডিং অ্যান্ড ক্যাড-ক্যাম অপারেশন।
মধ্যম মানের কর্মী হিসেবে
কর্মরত এবং ন্যূনতম দুই
বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে
হবে। এইচএসসি বা ততোধিক শিক্ষাগত
যোগ্যতা থাকলে এক বছরের
কাজের অভিজ্ঞতা থাকলেই চলবে। বয়সসীমা
১৮ থেকে ৫০ বছর।
অগ্রাধিকার পাবেন নারী, প্রতিবন্ধী,
সুবিধাবঞ্চিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর
প্রার্থীরা।
লক্ষ্য
দক্ষ
কর্মী
তৈরি
৮০ শতাংশ ক্লাস হবে ব্যাবহারিক,
২০ শতাংশ তত্ত্বীয়। প্রশিক্ষণ
দেবেন লেদার গুডস অ্যান্ড
ফুটওয়্যার শিল্পের দক্ষ প্রশিক্ষকরা। লেদার
গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি)
প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান ভূইয়া
বলেন, ‘আমাদের দেশে লেদার
গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার পণ্যের রয়েছে বিশাল
বাজার। আমাদের তৈরি পণ্য
রপ্তানি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
তাই এ শিল্পকে ঘিরে
রয়েছে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ। কিন্তু
এ খাতে খুব বেশি
দক্ষ কর্মী তৈরি হয়নি।
দেশে শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত অনেক বেকার রয়েছে।
তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী হিসেবে
গড়ে তোলা হবে। এ
ছাড়া এ শিল্পে কর্মরত
মধ্যম মানের কর্মীদের আরো
দক্ষ করে তোলা হবে।’
আবেদন
ও
বাছাই
আবেদন ফরম পাওয়া যাবে
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার
ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি)
সদস্যভুক্ত কম্পানিগুলোতে। অফিস চলাকালীন আবেদন
ফরম সংগ্রহ করা যাবে।
ঢাকার সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ,
কুমিল্লা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোট
২৬টি কম্পানির প্রশাসন বিভাগ থেকে আবেদন
ফরম সংগ্রহ করা যাবে।
আবেদন ফরম পূরণ করে
ওই কম্পানিতেই জমা দিতে হবে।
ফরমের সঙ্গে জমা দিতে
হবে প্রার্থীর তিন কপি পাসপোর্ট
সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র
অথবা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি ও পারিবারিক
আয়ের সনদপত্র।
আরিফুর রহমান ভূইয়া জানান, প্রার্থী বাছাইয়ের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। পড়ালেখা জানা না থাকলে প্রশিক্ষণে ভর্তি নেওয়া হয় না। প্রার্থী বাছাইয়ে কেন প্রশিক্ষণ নিতে চায়, কাজ শেখার আগ্রহ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়।
মিলবে
ভাতা
ও
চাকরি
আরিফুর রহমান ভূইয়া জানান,
প্রশিক্ষণের জন্য প্রার্থীদের কোনো
ফি গুনতে হবে না;
বরং প্রতি মাসে দেওয়া
হবে যাতায়াত ও টিফিন ভাতা।
প্রকল্পের নিয়মানুসারে প্রশিক্ষণার্থীকে ন্যূনতম ৮০ শতাংশ ক্লাসে
উপস্থিতির ভিত্তিতে প্রতিদিনের যাতায়াত ভাতা বাবদ ১০০
টাকা এবং টিফিন বাবদ
৫০ টাকা দেওয়া হবে।
কাজের দক্ষতা মূল্যায়ন করে
দেওয়া হবে সনদ।
প্রশিক্ষণ শেষে প্রার্থীদের কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে। এমনকি প্রশিক্ষণদাতা প্রতিষ্ঠানেও হতে পারে চাকরি। সেইপ প্রকল্পের সনদের মূল্যায়ন করা হয়
দেশের বাইরেও। তাই বিদেশে চাকরি পেতে সহায়তা করবে কোর্সটি।
ভর্তি
তথ্য
পাবেন
যেখানে
খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে
প্রশিক্ষণার্থী খোঁজা হয়। তাই
নিয়মিত চোখ রাখতে হবে
পত্রিকায়। এ ছাড়া প্রশিক্ষণসংক্রান্ত
সব তথ্য জানা যাবে
এলএফএমইএবি নির্ধারিত কম্পানির মানবসম্পদ বিভাগ এবং এলএফএমইএবি-সেইপ প্রকল্প অফিসে।
ঠিকানা : ইরেক্টর্স হাউস (১৫ তলা), কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৭৩০৬১১০৩৮
Discussion about this post