নিজস্ব প্রতিবেদক
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি সমমান পর্যায়ের প্রায় পৌনে দুই লাখ শিক্ষার্থীর কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে তা নিয়ে সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এসএসসি ভোকেশনাল পাস করে যারা কলেজে ভর্তি হয়েছেন তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বেশি। এমনকি কারিগরি এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রও এখনো দেওয়া হয়নি। অপরদিকে করোনাভাইরাসের কারণে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সরকার।
এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে তেমন সমস্যা তৈরি না হলেও সমমানের পরীক্ষাগুলোয় জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজ থেকে চলতি বছর অন্তত এক লাখ ১৪ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর এইচএসসি সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এইচএসসি-ভোকেশনালেও প্রায় আট হাজার ও ডিপ্লোমা ইন কমার্সের প্রায় এক হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অষ্টম পর্বে মৌখিক পরীক্ষা না হওয়ায় সাত মাস ধরে অপেক্ষায় আছেন আরও ৪৮ হাজার শিক্ষার্থী।
সবমিলিয়ে কারিগরির এইচএসসি সমমানের প্রায় এক লাখ ৭২ হাজার পরীক্ষার্থী মূল্যায়ন নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। জানা যায়, এইচএসসি (বিএম) দুই বছরের কোর্স হওয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে আলাদা মূল্যায়ন করা হয়। দুই বর্ষের ফল গড় করে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে বোর্ড। বিএমের প্রথম বর্ষের ফল গত বছরই প্রকাশ করেছে। তবে করোনার কারণে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা আটকে আছে।
এদিকে ঢাকার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, ‘কারিগরি এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র এখনো দেওয়া হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা ফরম পূরণের পর দেশের বাইরে গেছেন। এখন সবাইকে পাস করিয়ে দিলে মৃত বা বিদেশে থাকা শিক্ষার্থীও পাস করবে। তাই ফল ঘোষণার আগে প্রবেশপত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের বর্তমান অবস্থান যাচাই করা জরুরি।’
এ বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোরাদ হোসেন মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ কলেজের থেকে ভিন্ন। বিএম প্রথম বর্ষের ফল প্রকাশিত রয়েছে। এইচএসসি-ভোকেশনালের অনেকের জেএসসির সার্টিফিকেটও নেই। সেক্ষেত্রে তাদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা কাজ করছি। একাধিক প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। যেটি চূড়ান্ত করা হবে সে আলোকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।’
তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রথম বর্ষের ফল মূল্যায়ন না করে জেএসসি ও এসএসসির ভিত্তিতে রেজাল্ট দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ প্রথম বর্ষে বোর্ড কর্তৃক মূল্যায়ন হয়েছে। সেজন্য প্রথম বর্ষের ফলের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে হবে। এসএসসি থেকে প্রয়োজনে সামান্য অংশ মূল্যায়নের আওতায় আসতে পারে বলে মত তাদের।
Discussion about this post