বিনোদন ডেস্ক
বয়সকে শুধুমাত্র একটি সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা করা মানুষ পৃথিবীতে হাতেগোনা। বার্ধক্যের চাপে প্রাকৃতিকভাবেই বিশ্রামে চলে যেতে হয় মানুষকে। তবে তার মাঝেও এমন অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেকে উজাড় করে দিতে পারেন নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে।
এমনই একজন মানুষ বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। সত্তরের দশকের এই ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’ আজ পা দিলেন জীবনের ৭৮তম বছরে।
মাত্র বিশ বছর বয়সে অভিনেতা হওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতার ব্ল্যাকার এন্ড কোং নামক জাহাজ কোম্পানির কাজে ইস্তফা দিয়ে মুম্বাই আসেন। অনেক পথ পেরিয়ে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ নামক একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। যদিও ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি, তবুও অমিতাভ এই ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেতা হিসেবে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
এরপরেই তাকে সুপারস্টার রাজেশ খান্নার সঙ্গে দেখা যায় ‘আনন্দ’ ছবিতে। যা বাণিজ্যিক সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র সমালোচকদের প্রশংসাও আদায় করেছিল। এরপর একে একে রাম বলরাম, শান, লাওয়ারিস এবং শক্তিসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দেন অমিতাভ। তবে সে সময়টাতে অভিতাভের সব থেকে সফল সিনেমা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে ‘দোস্তানা’কে।
তিন বছর পরে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর ১৯৮৮ সালে ‘শাহেনশাহ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বচ্চন চলচ্চিত্র জগতে প্রত্যাবর্তন করেন।
শুধু সিনেমার রঙিন পর্দায় নয়, নিজের পারিবারিক জীবনেও সফল এই সুপারস্টার। ৩ জুন ১৯৭৩ সালে বাঙালি অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ির সঙ্গে জীবনের পথা চলা শুরু অমিতাভের৷ ৪৭ বছর কাটিয়ে আজও বলিউডের সেরা দম্পতি হিসেবেই খ্যাত তারা।
তাদের দুই সন্তান শ্বেতা নন্দা ও অভিষেক বচ্চন। ছেলে অভিষেক বান্টি অর বাবলি, দাশ, ব্লাফমাস্টার , ধুম ২, গুরু , সরকার রাজ, বোল বচ্চনসহ আরও অনেক সিনেমা দিয়ে বলিউডে বেশ শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন।
টেলিভিশন কর্মজীবনেও সমানতালে সফল অমিতাভ বচ্চন। ২০০০ সালে বচ্চনকে ব্রিটিশ টেলিভিশন গেম শো হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নেয়ার?-এর ভারতীয় সংস্করণের সঞ্চালক হিসেবে দেখা গিয়েছিল। যার নতুন নাম হয়েছিল কৌন বনেগা ক্রোড়পতি। দর্শকনন্দিত এই অনুষ্ঠানটির এখনো সঞ্চালনা করে যাচ্ছেন বচ্চন। বর্তমানে রিয়লেটি শো টির ১২তম সিজন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
শিল্পকলায় তার অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ এবং ২০১৫ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে।
বিশ্ব চলচ্চিত্রে তার অনন্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। এ ছাড়া নানা পর্যায়ে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন অমিতাভ। তার মধ্যে রয়েছে চারটি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তার মুকুটে যুক্ত হয়েছে দাদাসাহেব ফালকে’র মতো সম্মানিত পুরস্কারও।
Discussion about this post