নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সব শিক্ষার্থীকে অটোপাস করানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তে খুশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শতভাগ পাস হওয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে মনে করা হচ্ছে। সবাইকে ভর্তির সুযোগ দিতে জিপিএ পয়েন্ট কমিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সীমিত থাকায় আগের তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার দ্বিগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যেসব পরীক্ষার্থী ফেল করার হওয়ার ভয়ে ছিলেন তাদের বেশিরভাগই ভর্তির জন্য নিম্নমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেছে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর ভর্তির জন্য এসব শিক্ষার্থীকেই টার্গেট করেছে নিম্নমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, ভালোমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকবে। তবে বিনা পরীক্ষায় এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হওয়া দুর্বল শিক্ষার্থীরা উচ্চতর শিক্ষার জন্য নিম্নমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই বেছে নেবেন। এজন্য প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে রোববার (১১ অক্টোবর) কথা হয় বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে এইচএসসির গ্রেড মূল্যায়ন করা যথার্থ সিদ্ধান্ত। পরীক্ষা নিতে গেলে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাবে বলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এমন সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানিয়েছি।’
শেখ কবির হোসেন মনে করেন, শতভাগ পাস দেয়া হলেও এতে করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বাড়বে না। ভর্তির জন্য ইউজিসির (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) নির্ধারিত জিপিএ থাকলে তাকে ভর্তি করানো যাবে। তবে সকলে যেন ভর্তি হতে পারে সেজন্য ইউজিসির এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়ে সহজ করলে ভর্তি বেড়ে যাবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি বলেন, বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেকে আর্থিক সংকটে রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী ফি আংশিক দিয়ে ভর্তি হচ্ছে। অনেকে সময়মতো শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। এ কারণে শিক্ষার্থী ভর্তি বাড়াতে শর্ত সহজ করার দাবি জানান তিনি।
ইউজিসির হিসাব অনুযায়ী, ৪৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন আছে ৬০ হাজারের মতো। বাকি আসন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে।
বর্তমানে অনুমোদন পাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৭টি। এছাড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ আছে।
তবে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেই সনদ বিক্রি, নিম্নমানের পাঠদান, খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে চালানো, শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
Discussion about this post