বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোসাম্মৎ হোসনে আরাকে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে সোমবার (১২ অক্টোবর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯০ অনুসারে তাকে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি পাবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত এবং ভাইস চ্যান্সেলর প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।
অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা সোমবার পৌনে ১২ টায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর পদে যোগদানের মাধ্যমে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরে বেলা সাড়ে ১২ টায় ভাইস-চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, ডিন, রেজিস্ট্রারসহ তার দফতরে এসে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এসময় নবনিযুক্ত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর তার এ নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
পরে তার যোগদানকে স্বাগত জানিয়ে এবং তাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, ট্রেজারার অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ, ডিনদের পক্ষে অধ্যাপক ড. মো. রায়হান আলী, শিক্ষক সমিতির পক্ষে সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান।
সূচনা বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। ভাইস-চ্যান্সেলর আশা করেন, দীর্ঘদিন পর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর পদটি পূরণ হওয়ায় এবং তা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিয়োগ লাভে একাডেমিক ও প্রশাসনিকসহ সার্বিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে। তিনি তার পক্ষ থেকে নবনিযুক্ত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
খুবির নবনিযুক্ত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরার সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত
অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ১৯৭০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদরে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর বোর্ড থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাসের পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। সেখান থেকে রসায়নে বিএসসি (অনার্স), এমএসসি এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে তিনি বিএড ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৯৮ সালের ১৯ অক্টোবর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিনে রসায়নের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং পরে রসায়ন ডিসিপ্লিন চালু হলে তার পদটি সেখানে স্থানান্তরিত হয়।
২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। তিনি রসায়ন ডিসিপ্লিন প্রধান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবদ্ধ সংস্থার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সদস্য। এছাড়া তিনি ২০১৪ সাল থেকে যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) সভাপতি। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, প্রভোস্ট এবং শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি খুলনার গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ মিউজিয়ামের ট্রাস্টি ছাড়াও শিক্ষা সংস্কৃতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
Discussion about this post