নিউজ ডেস্ক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশাসনিক কাজে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নাম রাখা এক ধরনের অন্যায়। বিষয়টি নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
খোদ মাদ্রাসার নামকরণ কমিটির সদস্যরা বলছেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিল রেখেই মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে। উপাচার্য নিজেই এতে সম্মতি দিয়েছেন।
নামকরণ কমিটির সদস্যদের ভাষ্য মতে, উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহানের উদ্যোগে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্টিত হয়েছে বলে তার জন্য ‘দোয়াও করতে’ ও ‘স্মরণে রাখতে’ উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নামকরণ করা হয়েছে।
মাদ্রাসার নামকরণ কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আলী হোসেন বলেন, উপাচার্যের আমলে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’ নামকরণ করার প্রস্তাব রাখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও আমি পরামর্শ করে উপাচার্যের কাছে এই নামের প্রস্তাব রেখেছিলাম। ‘সোবহান’ শব্দের বাংলা অর্থ পবিত্র। আমরা দোয়াও করবো, স্মরণ করবো যে, তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। উপাচার্য নামটি রাখার ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছেন।
নামকরণের বিষয়ে উপাচার্যকে জানানো হয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, নামকরণের আগে উপাচার্যকে বলেছিলাম, আপনার জন্য দোয়া করবো। আপনার উদ্যোগে যখন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলো, আপনার জন্য দোয়া করতে আমরা বলবো, উনার নামে দোয়া করো। তাই উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নামকরণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থান জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণ করা হয়। চলতি বছরের ৬ মে ওই মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। সম্প্রতি ওই মসজিদের দ্বিতীয় তলায় ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে এ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে কবরস্থান জামে মসজিদের ইমাম মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, হাফেজিয়া মাদ্রাসায় নভেম্বরের শুরুতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে। প্রাথমিকভাবে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির পরিকল্পনা রয়েছে। মাদ্রাসার ২ জন শিক্ষকের দ্বারা তাদের পড়ানো হবে। ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানে থাকা-খাওয়াসহ সর্বমোট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নামকরণ যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই এটা এক ধরনের অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদে কারো নাম দিতে গেলে বিভিন্ন কমিটির সিদ্ধান্ত লাগে। একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদন দরকার হয়। এক্ষেত্রে অনুমোদন হয়েছে কি না, সেটা আমি জানি না। তবে উপাচার্যের নামে মাদ্রাসার নামকরণ করার কোনো কারণ নেই।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post