নিউজ ডেস্ক
চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ না হওয়ার জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক আইনজীবীদের ‘আভিজাত্য ও কুলীনতা’কে দায়ী করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, “ঢাকাকেন্দ্রিক আইনজীবীদের আভিজাত্য এবং কুলীনতার কারণে আমাদের সার্কিট বেঞ্চটা হচ্ছে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদী হতেই হবে এবং শক্তিশালী ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।”
সোমবার চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির একাউন্টিং, বিলিং ও ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি একথা বলেন।
এরপর ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দেই চট্টগ্রামের সন্তান আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
এরপর চট্টগ্রামে একাধিক অনুষ্ঠানে এসে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। কিন্তু তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
নওফেল বলেন, “আমার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে পঞ্চগড়ে। আরও বেশি আর্থিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে কেন ঢাকায় এসে রিট পিটিশন করতে হবে? তাহলে মৌলিক অধিকার আমার কীভাবে রক্ষা পেল?”
‘রিট জুরিসডিকশন অবশ্যই ডিসেন্ট্রালাইজ করতে হবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “নয়ত সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পারব না। নির্বাহী বিভাগ থেকে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিচার বিভাগকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।”
ভারতের উদাহরণ টেনে নওফেল বলেন, পশ্চিমবঙ্গে, মাদ্রাজ, তামিলনাড়ুতে সার্কিট বেঞ্চ আছে।
বিচার অঙ্গনে ঔপনিবেশিক চর্চা থেকেও বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের উচ্চ আদালতে এখনও ইংরেজি ভাষা রেখে দিয়েছে। আমি বারবার বলি, এজন্য আমার সমালোচনা করা হয়। যুক্তরাজ্যে প্লেইন ইংলিশ ক্যাম্পেইন দেখেছি, সাধারণ মানুষ যে ইংরেজিতে কথা বলে, সেই ভাষায় সেখানকার বিচারকরা যাতে রায় দেন। সেই আন্দোলন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে।
“কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের উচ্চ আদালতে আমরা এখনো ইংরেজি ভাষায় কথা বলি। যেই ভাষায় আমার ৯৯ শতাংশ সাধারণ মানুষ কথা বলে না সে ভাষায় কেন আমি বিচারের রায় দিব? এটা অনেকটা ব্যারিয়ার টু জাস্টিস। এক্সেস টু জাস্টিস নিশ্চিত করতে হলে সাধারণ মানুষের ভাষায় বিচারের রায় দিতে হবে।”
ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মোক্তার আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বার কাউন্সিল সদস্য মুহাম্মদ দেলেয়ার হোসেন চৌধুরী, জেলা জজ ইসমাইল হোসেন ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান।
Discussion about this post