নিউজ ডেস্ক
বেসরকারি কলেজগুলো সরকারিকরণের সময় কর্মরত সব শিক্ষক-কর্মচারীকে অন্তর্ভুক্ত করে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে অ্যাডহক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকরা। প্রাতিষ্ঠানিক ত্রুটিজনিত কারণে কোন শিক্ষক-কর্মচারীকে বঞ্চিত না করে অ্যাডহক নিয়োগের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
একইসঙ্গে সরকারিকৃত কলেজগুলোতে সংযুক্তি আদেশপ্রাপ্ত সব শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে কলেজগুলো শিক্ষা ক্যাডারের অনুপ্রবেশ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে পিএসসির মাধ্যমে সরকারিকৃত কলেজেগুলো নন-ক্যাডার প্রভাষকদের নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এসব দাবি জানিয়ে জেলায় জেলায় মানববন্ধন করেছেন সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকরা। সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস) জেলায় জেলায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বলে আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রসাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দ্রুত আত্তীকরণের জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয় বলে জানায় সকশিস।
শিক্ষক নেতারা বলেন, বেসরকারি থেকে আত্তীকরণের জন্য কয়েকবছর ধরে আমাদের কলেজগুলোর কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাইয়ের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। কলেজ সরকারি হলেও শিক্ষক-কর্মচারীরা আগের মতোই বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর মতো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সরকারিকরণের সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে অবসরে চলে গেছেন। যাদের বয়স ৫৯ বছর হয়েছে তাদের নাম ছাড়াই পদ সৃজনের প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে, যা অযৌক্তিক, অমানবিক, বৈষম্যমূলক ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা এসব থেকে দ্রুত মুক্তি চাই এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করি।
মানববন্ধন থেকে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস) বেশকিছু দাবি জানিয়েছেন। এগুলো হল-
১. প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের জন্য প্রজ্ঞাপন জারির তারিখে কর্মরত সকল শিক্ষক- কর্মচারীকে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে অ্যাডহক নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রাতিষ্ঠানিক ক্রুটিজনিত কারণে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে আত্তীকরণ বঞ্চিত করা ও হয়রানি করা যাবে না।
৩. মন্ত্রণালয়ের আত্তীকরণের যাচাই-বাছাই কাজে রেসরকারী কলেজের নিয়োগ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আছে এমন ব্যক্তি যারা পূর্বে আত্তীকৃত হয়েছে তাদেরকে এবং বর্তমানে য়ারা আত্তীকৃত হতে যাচ্ছে তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৪. সদ্য সরকারিকৃত কলেজসমূহ থেকে সংযুক্তি আদেশপ্রাপ্ত সকল শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার
৫. এনাম কমিটির সুপারিশ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ শিক্ষক পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পদ ও পদসোপান সৃজন করে পদোন্নতি দিতে হবে।
৬. যোগদানের তারিখ থেকে চাকরি শতভাগ গণনা করে কার্যকর চাকরিকাল নির্ধারণ এবং পদোন্নতিসহ সকল ক্ষেত্রেই তা কার্যকর করতে হবে।
৭. সরকারি চাকরি নীতিমালা অনুসরণপূর্বক আত্তীকৃত শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি বদলিযোগ্য করতে হবে।
৮. বেসরকারি আমলে প্রদত্ত কল্যাণ তাহবিল ও অবসর সুবিধার চাঁদা এমপিও বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে সুবিধাসহ ফেরত দিতে হবে।
৯. সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা’২০১৮ এর অসঙ্গতি ও বৈষম্য দূরীকরণ ও বিধির বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উপবিধিসমূহ প্রণয়নের কাজ জরুরী ভিত্তিতে শুরু এবং প্রণয়নের কাজে আত্তীকৃতদের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
১০. আত্তীকৃত শিক্ষকদের স্বতন্ত্রভাবে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. শিক্ষাবোর্ডসহ শিক্ষা প্রশাসনের সকল অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের পদসমূহে আনুপাতিক হারে আত্তীকৃতদেরকে পদায়ন করতে হবে।
১২. ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সে শিক্ষকদের পদ মর্যাদা বা অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে।
১৩. শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চালু করতে হবে।
১৪. সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের চাকরির অবসর গ্রহণের বয়স ৬৫ বছরে উন্নীত করে ন্যাশনাল এডুকেশন সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
Discussion about this post