নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ‘ঘরবন্দি’ শিক্ষার্থীদের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এর উদ্যোগে সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ে চালু করা এই শিক্ষা কার্যক্রমের প্রথমদিকে তেমন সাড়া না মিললেও ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রচার-প্রচারণার অভাবসহ নানা কারণে প্রথমদিকে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে। তবে অক্টোবরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এজেডএম শরীফ হোসেন জানান, করোনার কারণে থমকে যাওয়া শিক্ষা কার্যক্রমে গতি আনতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কিছুটা কম থাকলেও এখন ধীরে ধীরে বাড়ছে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা আগ্রহী হচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীর মাঝে সংসদ টিভিসহ কয়েকটি মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হলেও সেখানে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একমুখি যোগাযোগ হচ্ছে। বস্তুত পাঠদানের পর শিক্ষার্থীদের মনের জিজ্ঞাসা বা তাদের সমস্যা সমাধানের সুযোগ সেখানে সীমিত। এই কারণেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
‘এর মাধ্যমে শিক্ষকের বিষয়ভিত্তিক লেকচারের পর কোনো শিক্ষার্থী কোনো টপিক বুঝতে না পারলে তার প্রশ্ন করার সুযোগ থাকছে। স্কুলের শ্রেণিকক্ষে যেমন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হয়, এই সমন্বিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমেও ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ থাকছে। ’
বর্তমানে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থী জুম অ্যাপ এবং জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত ২৫ আগস্ট শুরু হওয়া অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ২০০টি ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গণিতে ৩০টি, ইংরেজিতে ৩০টি, বিজ্ঞানে ৪৫টি এবং আইসিটিতে ২০টি ক্লাস নেওয়া হয়েছে।
৫০ জন শিক্ষক অনলাইনে এসব ক্লাস নিয়েছেন। এরমধ্যে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১ জন, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ জন, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ জন, সরকারি মুসলিম হাইস্কুলের ৬ জন, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ জন, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ জন, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষক রয়েছেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট প্ল্যাসিডস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাকলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, জামালখান কুসুম কুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) গালিব চৌধুরী জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে একটি ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হয়। রুটিনে উল্লেখিত সময়ে, নির্দিষ্ট বিষয়ে জুম অ্যাপের মাধ্যমে একজন শিক্ষক তার স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য লেকচার দিয়ে থাকেন। সেই লেকচার জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে লাইভ ফিড দেওয়া হয়।
Discussion about this post