বিশেষ প্রতিবেদক
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এবার জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক পাচ্ছেন দেশের ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। দুটি ক্যাটাগরিতে গাজীপুরে দু’জন এ পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন। এর একজন কালিয়াকৈর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম ও কাপাসিয়ার নলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম শফিকুল আলম।
বারবার ছিটকে পড়েও মনেপ্রাণে লেগে থাকার কারণে আজ দেশসেরা সহকারী শিক্ষকের পদক পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার নলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম শফিকুল আলম। শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের পর অধিদফতরের সর্বোচ্চ এ পদক পাওয়া ছিল তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।
শিক্ষক এস এম শফিকুল আলম জানান, একাধিকবার ক্লাস্টারের সেরা শিক্ষক হওয়ার দৌড়ে ছিটকে পড়তে হয়েছে। যতবার ছিটকে পড়েছেন ততবারই নিজেকে আরও শক্তভাবে গড়ে তুলেছেন।
তিনি বলেন, উপজেলার পাবুর ক্লাস্টারের শিক্ষক তিনি। এ পদকের জন্য প্রাথমিক যাত্রা শুরু হয় ক্লাস্টার থেকে। সাধারণ পঠন-পাঠন কাজের বাইরে নিজেকে বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে হয়েছে তাকে। মুখে বলা বা ডকুমেন্ট উপস্থাপনের মধ্যেই প্রতিভার স্বাক্ষর সীমাবদ্ধ নয়। এর জন্য ব্যবহারিক তথা সরাসরি প্রমাণও রাখতে হয়েছে। আর এগুলোই যোগ্যতা প্রমাণের মাপকাঠি।
২০১৬ সালে জেলার সেরা সহকারী শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু বিভাগীয় পর্যায়ে গিয়ে প্রতিযোগিতায় ছিটকে পড়েন। পাসপোর্ট তৈরির খরচ থেকে শুরু করে নিজ বাসস্থানে ফেরা পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় তিনি ফিলিপাইন ভ্রমণ করেন।
তিনি জানান, প্রতিযোগিতাটা হয় শিক্ষকতার দক্ষতা, অতিরিক্ত পারদর্শিতা ও পারঙ্গমতার ওপর। পদকপ্রাপ্তি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো তাকে সহায়তা করেছে বলে তিনি মনে করেন তার মধ্যে রয়েছে, সংগীতে পারদর্শিতা, কবিতা, গল্প, গান উপন্যাস লেখা ও একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া। এছাড়াও নিজের জানা বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া। শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত শেখানো, বিদ্যালয়ে ছাদকৃষি, মাঠ কৃষি, জাতীয় দিবসগুলোতে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিজের লেখা গান, কবিতা, নাটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
তিনি বলেন, ২০০০ সনে তিনি শিক্ষকতায় যোগ দেন। যোগদানের পর থেকে শিক্ষকতায় সর্বোচ্চ পদক প্রাপ্তির প্রতি তার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে তার মধ্যে নিজেকে ভিন্নমাত্রার একজন শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মনোবাসনা গড়ে উঠে। ২০০১ সাল থেকে ফুটবল জগতে নিজেকে যুক্ত করেন। বিদ্যালয় এবং এলাকা ছাড়াও উপজেলা জেলা পর্যায়ে ফুটবল খেলার রেফারির দায়িত্ব পালন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের একজন তালিকাভুক্ত রেফারী।
গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, সকল ক্যাটাগরিতে এস এম শফিকুল আলম একজন আদর্শ শিক্ষক। তিরি নিজে শিক্ষা উপকরণ তৈরি এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করে আনন্দঘন পরিবেশের মাধ্যমে পাঠদানে সক্রিয়।
Discussion about this post