জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গণহারে বেতন-ফি নেওয়া হচ্ছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের বাবুপুর জিরতলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ।এমনই অভিযোগ উঠেছে ঐ স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষকরা তাদের রশিদ দিয়ে বলেছেন, বাড়ি থেকে বেতন-ফি এনে স্কুলে জমা দিতে। বেতন না দিলে তাদের আগামী বছর পরবর্তী শ্রেণিতে উর্ত্তীণ করা হবে না। তাই বেতন-ফি জমা দিতে তারা বাধ্য হচ্ছে। তবে বেতন-ফি না দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো আদেশ আছে কি-না সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। শিক্ষকরা দিতে বলায়, তারা দিচ্ছে।
স্থানীয় বাবুপুর জিরতলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেক অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, বেগমগঞ্জের অন্যতম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই বাবুপুর জিরতীল ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৯০০ ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে গত আট মাস সারাদেশের মতো বাবুপুর জিরতলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৩১ অক্টোবর থেকে ০৫ নভেম্বর পুরো সপ্তাহজুড়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন অনলাইন ক্লাসের ঘোষণা দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত করে নাম ও রোল নম্বর লিখে বেতন-ফির রশিদ হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন এবং তারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হুমকিও দিচ্ছেন ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০০ টাকার করে ১০ বা ১২ মাসের বেতন-ফি জমা দেওয়ার জন্য। না হয় তাদের পরবর্তী শ্রেণিতে উর্ত্তীণ করা হবে না’।
অভিভাবকরা আরও জানান, করোনার কারণে তারা অনেকেই চাকরি হারিয়ে দিশেহারা। অনেকেই ব্যবসায় লোকসান দিয়ে অভাব-অনটনের মধ্যে আছেন। অনেকেরই নুন আনতে পান্তা ফুরায়। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ আছে করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সময়ে কোনো শিক্ষার্থীকে বেতন-ফি দিতে হবে না। সেখানে কীভাবে ওই প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডহক কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেতন-ফি নিচ্ছেন। অভিভাবকরা এ অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
ম্যানেজিং (অ্যাডহক) কমিটির আহ্বায়ক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের নানা ধরনের ব্যয় নিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। একে তো করোনাকাল আবার স্কুলও বন্ধ। এ অবস্থায় সবার কাছে থেকে নয়, যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো, শুধু তাদের কাছ থেকে বেতন-ফি নেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাউসুল আজম এ বিষয়ে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে করোনাকালীন সময়ে যেহেতু স্কুলের কোনো আয়ের খাত নেই, তাই সামর্থ্য অনুযায়ী বেতন-ফি দিয়ে স্কুলকে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে। এর বাইরে কেউ যদি জোরপূর্বক বা হুমকি প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গণহারে বেতন-ফি আদায়ের লিখিত অভিযোগ করেন, আমরা যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেবো।
Discussion about this post