চুয়েট প্রতিনিধি
গবেষণায় কৃতিত্বপূর্ণ সফলতার জন্য অষ্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (ইউএনএসডব্লিউ) থেকে ডীনস অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন বাংলাদেশী তিন শিক্ষার্থী। তারা তিনজনই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী। স্নাতক শেষে এই তিনজন শিক্ষার্থীই অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে।
অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডীনস অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত হওয়া তিনজন হলেন- ড. সাইয়েদুল মুরসালিন, ড. আহসানুল হাবীব এবং ড. সুমনা বিশ্বাস। ড. সায়েদুল মুরসালিন ইউএনএসডব্লিউ, সিডনি এবং বাকি দুজন ইউএনএসডব্লিউ, ক্যানবেরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ড. মুরসালিন জানান, গত ২৪ আগস্ট ইউএনএসডব্লিউ এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এবং মেইলযোগে শিক্ষার্থীদের এসব নাম প্রকাশ করা হয়। তবে করোনার ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনো সমাবর্তনের আয়োজন করেনি।
ড. সাইয়েদুল মুরসালিন চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার থিসিসের শিরোনাম ছিল Diagnostic measurement and modelling of Electrical insulation Based on very low frequency high voltage Excitation.
এদিকে ড. আহসান হাবিব চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গবেষনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিলো Efficient Algorithms for Computationally Expensive Optimization Problems. আমার থিসিসের এর মূল লক্ষ্য ছিলো গণনামূলকভাবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল Optimization সমস্যার জন্য এমন দক্ষ এলগরিদম তৈরী করা যারা খুব অল্পসংখ্যক ব্যয়বহুল ডাটা ব্যবহার করেও উচ্চমানসম্পন্ন সমাধান প্রদানে সক্ষম।
ডীনস অ্যাওয়ার্ড অর্জন সম্পর্কে ড. আহসানুল জানান, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশলের ছাত্র হওয়ায় কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কিত পিএইচডি যাত্রাটি প্রাথমিকভাবে আমার জন্য খুব বেশি সুখকর ছিল না। এলগরিদম ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার প্রাথমিকভাবে অনেক সময় লেগে যায়।
তিনি জানান, যার কারণে নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুদিন পর আমি থিসিস জমা দিতে সক্ষম হই। স্কলারশিপ পরবর্তী ও থিসিস জমাদান পূর্ববর্তী সেই সময়টি আমার জন্য বেশ সংগ্রামমূখর একটি সময় ছিলো।
অন্যদিকে ড. সুমনা বিশ্বাস চুয়েটের ০০-০১ শিক্ষাবর্ষের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ডীনস পদক অর্জন সম্পর্কে তিনি জানান, আমার পিএইচডি যাত্রাটি খুব বেশি সুখকর ছিল না। একে তো বিদেশ, যেখানে সব কিছু নিজেকে একা হাতে সামলাতে হয় তার উপর আমার দেড় বছরের ছেলে। সব মিলিয়ে খুব কঠিন সময় গেছে।
তিনি বলেন, তবে আমার স্বামী, বাবা, বোন, ভগ্নিপতি, সর্বোপরি আমার পরিবারের অসামান্য সমর্থন, আমার চুয়েট, রুয়েটসহ সকল পরিচিতদের সাহায্য এবং আমার ছেলের আত্মত্যাগ – সবকিছু মিলিয়ে যাত্রাটার সফলতা সম্ভব হয়েছে।
ড. সুমনার পিএইচডি থিসিসের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার থিসিসের শিরোনাম ছিল Real-time Path Planning (Mission Planning) for a Swarm of Autonomous Systems. থিসিস এর মূল বিষয়বস্তু হলো চালকবিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ির সফল মিশন পরিচালনা। কিভাবে চালক বিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, তাদের মধ্যে কোনো রকম সংঘর্ষ ছাড়া এবং পথে কোনো রকম বাধা থাকলে তাকে সংঘর্ষ ছাড়া অতিক্রম করে কম সময়ে গন্তব্য পৌঁছেতে পারে।
Discussion about this post