নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের আওতাধীন ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজী প্রোগ্রাম ফেজ-২ প্রোজেক্টের (এনএটিপি-২) অর্থায়নে পরিচালিত ৬২ টি ক্রপ সায়েন্স সম্পর্কিত গবেষণা প্রকল্পের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের জন্য ৬ জন গবেষকের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নির্বাচিত হয়েছে।
এর মধ্যে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তারিকুল ইসলাম পরিচালিত প্রকল্প ম্যাঙ্গো ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
পিআইইউ-বিএআরসি’র পরিচালক ড. মো. হারুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ম্যাঙ্গো ফ্রুট ব্যাগিং প্রকল্পের পরিচালক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমি বিএআরসি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। এটি আমার জন্য যেমন গর্বের তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও সম্মানের বলে আমি মনে করি।
এই প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারিত হলে দেশের মানুষেরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি নিরাপদ ফলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ফল রপ্তানি করে বৈদিশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি জানান।
অধ্যাপক তারিকুল আরও জানান, ‘২০১৫ সাল থেকে আমের ফ্রুট ব্যাগিং নিয়ে আমি গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত পিয়ার রিভিউ জার্নালে এ সম্পর্কিত ৮টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অঞ্চল এবং আমের জাত পরিবর্তন করে ব্যাগিং এর কার্যকারিতা এবং ফলের গুণাগুণ ঠিক আছে কি’না তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়। আমরা অনেকেই ফলের পোকা-মাকড় দমনের জন্য বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করি যা আমাদের শরীর এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে নিরাপদ, বিষমুক্ত, প্রাকৃতিকভাবে রঙ্গিন ও গুণগত মানসম্পন্ন আম উৎপাদন সম্ভব।’
ব্যাগিং করা আম সংগ্রহের পর ১৪-২০ দিন পর্যন্ত ঘরে রেখে খাওয়া যায়। তাছাড়া কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকের কেনার বাড়তি খরচ অনেকটা কমে যায়। ব্যাগিং প্রযুক্তিতে ৭০-৯০ ভাগ পর্যন্ত স্প্রে খরচ কমানো সম্ভব। ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিটি বাংলাদেশে একটি নতুন ও সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি। ফ্রুট ব্যাগিং বলতে ফল গাছে থাকা অবস্থায় বিশেষ ধরনের ব্যাগ দ্বারা ফলকে আবৃত করাকে বুঝায় এবং এর পর থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত গাছেই লাগানো থাকে ব্যাগটি। এই ব্যাগ বিভিন্ন ফলের জন্য বিভিন্ন রঙ এবং আকারের হয়ে থাকে। তবে আমের জন্য দুই ধরনের ব্যাগ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত ফল নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও রপ্তানি উপযোগী করা যাবে।
আগামী ১৬ নভেম্বর পিআইইউ-ডিএই কর্তৃক নির্বাচিত ৬ টি ফসল প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণে (প্রদর্শনী) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবক এবং পিআইইউ- ডিএই এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কৌশল বিষয়ে একটি মতবিনিময় সভা জুম মিটিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে।
Discussion about this post