অনলাইন ডেস্ক
তাপমাত্রা হ্রাস পেলে বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ছোট ছোট ধূলিকণা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের ভেতরে প্রবেশ করে জ্বালা এবং ফুসফুসের নানা সমস্যা সৃষ্টি করে।
তবে কিছু ভিটামিন আমাদের ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে এবং কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে পারে। শীতে কিছু ভিটামিন গ্রহণ করলে শ্বাসকষ্ট এবং জ্বালা জাতীয় সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারবেন। ফুসফুস ভালো রাখতে শীতে তিন ধরনের ভিটামিন খেতে পারেন।
ভিটামিন এ
ভিটামিন এ চর্বিযুক্ত দ্রবণ যা ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, যা দেহের কোষকে পুনরায় জন্মাতে সহায়তা করে।
তাই ভিটামিন এ গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে আপনি ফুসফুসের টিস্যুগুলোকে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ রাখতে পারেন। ফুসফুসের কার্যকারিতার জন্য এই ভিটামিনের গুরুত্বের পাশাপাশি এটি অন্যান্য টিস্যু এবং কোষের উন্নতি করে থাকে। ভিটামিন-এ ভ্রূণের ফুসফুস বিকাশেও সাহায্য করে থাকে।
ইতিবাচক দিক হলো, অতিরিক্ত ভিটামিন এ খাওয়ার দরকার নেই। চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায় এই পুষ্টিকর উপাদানগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরে সংরক্ষণ করা হয় এবং অল্প পরিমাণে প্রয়োজন হয়।
ভিটামিন এ বেশি গ্রহণ করলে লিভার এবং হাড়ের সমস্যা হয়। দুগ্ধজাত পণ্য, মাছ, গাজর, ব্রকলি, ক্যান্টালাপ এবং স্কোয়াশ ভিটামিন এ এর কিছু সাধারণ উৎস।
ভিটামিন সি
ভিটামিন সি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সহায়তা করে। ফুসফুসকে দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করা এর মধ্যে অন্যতম। একদিনে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করলে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ত্বকে কোলাজেন গঠন করতে সাহায্য করে। ধূমপান এবং দূষণের কারণে ফুসফুসে ফ্রি র্যাডিকাল এবং টক্সিনের উপস্থিতির কারণে শরীরে প্রদাহ হতে পারে।
ভিটামিন সি, যা মূলত সাইট্রিক ফলগুলোতে উপস্থিত থাকে, এটি ফ্রি র্যাডিক্যালস এবং টক্সিনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীরকে এই ক্ষতিকারক অণুগুলো থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। এটি ফুসফুসের টিস্যুগুলোর ক্ষতির হারকে আরও কমিয়ে দেয় এবং এটি শরীরকে পুনরায় প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ হতে সুযোগ দেয়।
অ্যালার্জি, অ্যাজমা এবং ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি জার্নালে প্রকাশিত ২০১৪ সালের সমীক্ষা অনুসারে, ভিটামিন সি ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে এবং শরীরচর্চার সময় এবং পরে শ্বাসকষ্টের প্রবণতা অর্ধেক কমিয়ে আনে।
এই পুষ্টির প্রধান সম্ভাব্য সুবিধাগুলো পাওয়া যায় এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানের কারণে। বেশি পরিমাণে সাইট্রাস ফল, কাঁচামরিচ, পেয়ারা, কিউই, ব্রকলি, ক্যাল এবং বেরি আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন যাতে ভিটামিন সি রয়েছে।
ভিটামিন ডি
দাঁত এবং হাড়কে শক্তিশালী করা ছাড়াও ভিটামিন ডি আপনাকে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী বাধাজনিত পালমোনারি রোগের (সিওপিডি) ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
একটি সমীক্ষা অনুসারে, ভিটামিন ডি এর ঘাটতি শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্টের মতো অন্যান্য সমস্যা ভিটামিন ডি এর অভাবে হতে পারে।
ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই পুষ্টিগুণের পর্যাপ্ত পাওয়া কঠিন কিছু নয় কারণ সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস। টুনা, স্যালমন, সার্ডিন, ঝিনুক এবং ডিমের কুসুমের মতো আরও কিছু খাবারে ভিটামিন ডি প্রাকৃতিকভাবে বেশি থাকে।
Discussion about this post