মরণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের পর অজানা নিউমোনিয়ার প্রকোপ এবং করোনার নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞদের মাঝে। ইতোমধ্যে মধ্য এশিয়ায় অজানা নিউমোনিয়া প্রাণ কেড়েছে অনেকের। এছাড়া কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে করোনার অনেক নতুন উপসর্গ। যা নিয়ে শঙ্কা আরো ঘণীভূত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এখনো অজানা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান মেলেনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাসের উপসর্গ কমবেশি সবারই জানা। জ¦র, শুকনো কাশি, গলাব্যথা, সর্দি, নাক বসে যাওয়া, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, স্বাদ এবং গন্ধ চলে যাওয়া এগুলো করোনার পুরনো উপসর্গ। এসব উপসর্গ ছাড়াও সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে দেখা দিচ্ছে নতুন ধরনের উপসর্গ। পেটে ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা করোনার নতুন উপসর্গ। আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যার মধ্যে ডায়রিয়া, বমি বা বমি বমি ভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও রয়েছে। এছাড়া অনেক করোনা রোগীর মধ্যে চোখের সংক্রমণের কথাও শোনা যাচ্ছে। এর ফলে রোগীর চোখ কনজাঙ্কটিভাইটিসের মতো লাল হয়ে যায়। অনেকটা চোখ ওঠার মতো। অ্যালার্জি, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে চোখের সাদা অংশটি লাল হয়ে যায়, পানি পড়ে এবং চোখ চুলকায়। সেই সঙ্গে চোখ ও মাথাব্যথার উপসর্গটিও নতুন যুক্ত হয়েছে।
কোভিড-১৯ বিষয়ে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের দাপটে এখনো নাজেহাল গোটা বিশ্ব। এই সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই বদলে গেছে মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রা। সংক্রমণ কমার বদলে আরো বাড়ছে। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। শুধু তাই নয়, দিন যতই গড়াচ্ছে এই ভাইরাসের নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য ও তথ্য সামনে আসছে। যা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন কিছু উপসর্গের কথা গবেষকরা জানিয়েছেন। যা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। তবে আমি মনে করি, আমাদের সতর্ক হতে হবে। মাস্কের ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প কিছু নেই।
অজানা নিউমোনিয়া প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন ভোরের কাগজকে জানান, নিউমোনিয়া নিয়ে আইইডিসিআর ইভেন বেইজ সার্ভিলেন্স (যেসব কারণ কোনো ব্যক্তির অসুস্থতার জন্য দায়ী সেসব কারণ, উপাদান বা ঘটনাকে সার্বক্ষণিক নিরীক্ষণ করা) করে থাকে। সেখানে ৬টি নির্দেশনা (সিগনাল) আছে। এই ৬টি সিগনালের মধ্যে কোনো একটি কারোর মধ্যে দেখা দিলে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও অজানা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে তেমন কোনো তথ্য আইইডিসিআরের কাছে নেই।
Discussion about this post