নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ভবন ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন রূপে তৈরি করা হবে। সেখানে বহুতল কমপ্লেক্স হবে। ষাটের দশকে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটি নতুন রূপ কেমন হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ ঢাবির মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত হলেও পুরো কাজ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি)। এই অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা টিএসসি ভবনের নকশা প্রণয়নের কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর এক সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে টিএসসি, শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে নতুন করে সাজানোর কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর টিএসসি ভবন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘১৯৬৪ সালে টিএসসি নির্মিত হয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০০, শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ২০০ থেকে কিছু বেশি। এটাকে বিবেচনায় রেখে এটুকু জায়গায় টিএসসির ভবন, মিলনায়তন ও ফ্যাসিলিটিজ তৈরি করা হয়েছিল। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজারের বেশি শিক্ষক আর ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আছেন। কিন্তু টিএসসি আগের মতোই আছে। প্রধানমন্ত্রী সে জন্যই আমাদের এটা পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশনা দিলেন।’
এদিকে, টিএসসিকে নতুন করে গড়ার লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর। নকশা প্রস্তুত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে চাহিদাপত্র নিয়েছে।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা সার্কেল-১৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, স্থপতিরা আমাদের জানিয়েছেন তারা নকশা প্রস্তুত করেছে, তবে সেটি আমাদের কাছে এখনও এসে পৌঁছায়নি।
টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর বলেন, সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতে এ কাজ বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত হলেও এতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটের প্রকৌশলীরা থাকবেন না। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে পুরো কাজ সম্পূর্ণ হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের কেউ কেউ টিএসসির দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। এ নিয়ে ফেসবুকেও বেশ লেখালেখি হচ্ছে।
নতুন টিএসসি কমপ্লেক্স কেমন হবে?
টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত তালিকা দিয়েছেন। পরবর্তীতে সেটি পিডব্লিউডিকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সেখানে নতুন যেসব সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মহড়াকক্ষ, জিমনেশিয়াম, টিএসসি-ভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক দলগুলোর জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত কক্ষসমূহ, আন্তঃক্রীড়া কক্ষ, আলাদা ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক মিলনায়তন, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট স্থান, অতিথি কক্ষসহ আরও অনেকরকম আধুনিক সুবিধাদি।
তিনি বলেন, তিনটি অডিটোরিয়াম থাকবে, যার একটিতে প্রায় ১৫০০ জনের বসার ব্যবস্থা ও অন্য দু’টিতে ৩০০ জন করে ধারণক্ষমতা থাকবে। তাছাড়া নতুন একটি সুইমিংপুল কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলায় নির্মাণ করা হবে।
Discussion about this post